পুলিশি টহলের মাঝে থেমে নেই আড্ডাও

শামীম আজাদ পল্লব, দূর্গাপুর থেকে:

উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর এবং মিনাবাজারে পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে। বাজারে আসা লোকজনকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বাসায় ফিরতে বলা হচ্ছে। অনেক প্রচেষ্টার পরও এই দুই বাজারে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অনেককেই চায়ের দোকানে দল বেঁধে আডডা দিতে দেখা গেছে। ফার্মেসি, মুদি দোকান ছাড়াও দুয়েকটি দোকান ৮ পর্যন্ত খোলা থাকতে দেখা গেছে বুধবার। মিনাবাজারের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো ঘুরে মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, সেসব গ্রামের মসজিদে নামাজের সময় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি মুসল্লী সমবেত হচ্ছেন। যা সত্যিই উদ্বেগজনক। উলিপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে অবস্থিত হওয়ায় এই দুই বাজারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বেশী।

করোনা প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে পান্ডুল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক মাইকিং করতে দেখা গিয়েছে। এছাড়া বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র‍্যাকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং মাইকিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সচেতনার পাশাপাশি গ্রামের মানুষের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা উদ্বগের কথা শোনা যাচ্ছে। যার প্রায় সবগুলোই অমূলক। একে গুজব বললেও ভুল বলা হবে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বেশি বেশি প্রচারণা চালানো উচিত বলে মনে করেন এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা।

খেটে খাওয়া মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে পান্ডুল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে উদ্যোগের কথা শোনা গেছে। ইউনিয়নের ছাট কাগজীপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র যতিনা বেগম (৫০)-এর সাথে কথা বলে যানা যায়, পরিষদের মেম্বার ত্রাণ প্রদানের উদ্দেশ্যে তার জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন। তিনি ছাড়াও গ্রামের অনেকে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিয়েছেন। বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা থাকলেও গত বুধবার পর্যন্ত সেই ত্রাণ তাদের হাতে এসে পৌঁছায় নি।

এদিকে বেসরকারি এবং ব্যাক্তিগত উদ্যোগে খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে বিভিন্ন সাহায্যে সহযোগিতার তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই সংকটময় মুহূর্তে এমন উদ্যগ মানুষকে আশার আলো দেখাচ্ছে। পান্ডুল ও দূর্গাপুরে ভাওয়াইয়া একাডেমির পক্ষ থেকে মাস্ক, সাবানসহ কিছু উপরকরণ বিতরণ করা হয়েছে ২০০ পরিবারের মধ্যে। এছাড়া দু’একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনও এগিয়ে এসেছে করোনার কারণে ক্ষতির শিকার দু:স্থদের সহায়তায়।

পাশ্ববর্তী এলাকার মধ্যে বাকরেরহাটে সার্বক্ষণিক পুলিশ টহলের খবর পাওয়া গেছে। সেখানকার মাঠে ছেলেদের খেলাধুলার প্রবণতা বন্ধ করা এবং সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে পুলিশকে বেগ পেতে হচ্ছে। মালতিবাড়ী ইউনিয়নের মাঝবিল বাজারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার মধ্যে বাজার শেষ করতে তাগিদ দিতে দেখা গিয়েছে। তাদের সহোযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় তরুণ এবং রাজনীতিবিদগণ। উল্লিখিত সকল স্থানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনতামূলক মাইকিং চলছেই। এমনকি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরও করোনা প্রতিরোধে জনগণকে বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে মাইকিং করতে দেখা গিয়েছে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!