ভোগডাঙায় নিত্যপণ্য সংকট, ত্রাণের জন্য আকুতি

সাজেদুল করিম সুজন, ভোগডাঙা থেকে:

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন ভোগডাঙা।  প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের বসবাস। ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর। কিন্তু মরণঘাতী করোনা ভাইরাস জনিত কারণে খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংকট দেখা দিয়েছে এই ইউনিয়নে। জনবহুল এই বিশাল ইউনিয়নে সরকারিভাবে মোট ত্রাণ পেয়েছেন মাত্র ৪৫০ জন এবং উত্তর কুমরপুর ১নং ওয়ার্ডে ৪০ জন। ভোগডাঙায় করোনা সন্দেহে একজন মহিলার নমুনা পাঠানো হয়েছে রংপুরে। এখনও চূড়ান্ত ফলাফল হাতে পাওয়া যায় নি।ঐ মহিলার বাড়ি ভোগডাঙার পরমালি দুই নং ওয়ার্ডের কৈকুড়ির পাড় গ্রামে। এখন তার পুরো বাড়ি লকডাউন। তিনি ঢাকার এক বাসায় কাজ করতেন, অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি  বাসায় আসেন।

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ড সদস্যের বক্তব্য:- স্বেচ্ছাসেবী কোন সংগঠন এখনো এগিয়ে আসেনি গরিব দুঃখী মানুষের সহযোগিতায়। ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার আহাদুল হকের সাথে কথা বলে জানা গেছে তার ওয়ার্ডে প্রায় ২৩০০ খানা এবং ওয়ার্ডের সিংহ ভাগ লোক নিম্নবিত্ত অথচ সরকারি ভাবে ত্রাণ পেয়েছে মাত্র ৪০ জন।

অপরদিকে ইউনিয়ন ভোগডাঙা ইউপি চেয়ারম্যান  সাইদুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারি ভাবে ইউনিয়নে মাত্র ৪৫০ জনের ত্রাণ দেয়া হয়েছে, অথচ ৪০-৪৫ হাজারের ও অধিক জনগনের সমন্বয়ে গঠিত ভোগডাঙা ইউপির অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর। রয়েছে রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি ও পরিবহন শ্রমিক ও দোকান কর্মচারিসহ দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল অনেক মানুষ। যারা এখন বেকার। তাদের সংসার চলছে সঞ্চিত অর্থে বা ধার দেনা করে।  চেয়ারম্যান জানান, তিনি নিজস্ব উদ্যোগে ৬০০ মাস্ক বিতরন করেন, এছাড়াও নিজের তহবিল থেকে ২০০-১০০ করে টাকা, চাল,ডাল ইত্যাদি দিয়ে আসছেন জনগণকে। তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাসে আজ গোটা বিশ্ব হতভম্ব। অথচ এই এলাকার মানুষগুলো অসচেতন। বিভিন্নভাবে প্রচার প্রচারনা, পোস্টারিং ও  মাইকিং করেও জনসমাগম কমানো যাচ্ছে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনাভাইরাস সম্পর্কে এই এলাকার বেশীরভাগ মানুষ অজ্ঞ। প্রচার মাধ্যমের খবরও অনেকে বিশ্বাস করছেন না। গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে নানা বয়সী মানুষ বসে গল্পগুজব করছে। কেউ কেউ লুডো খেলছে। কারো কারো মধ্যে উৎসবের পরিবেশ। বিশেষ করে যারা ঢাকা  থেকে গ্রামে এসেছেন, তাদের মধ্যে এ ধরনের মনোভাব বেশী। বেসরকারিভাবেও কোনো প্রতিষ্ঠান বা কেউ এখানো সেরকম ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় নি। এলাকার মানুষ মনে করেন, সরকারি অথবা বেসরকারি কিংবা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো পাশে দাঁড়ালে তারা কিছুটা উপকৃত হতো।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!