জুন পর্যন্ত সব অনুষ্ঠান ও খেলাধুলা বন্ধ

মো: আব্দুর রাজ্জাক, কানাডা থেকে:
কানাডাতে বর্তমানে ৩ কোটি ৭৭ লাখ মানুষ বাস করে। ৭ এপ্রিল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৮৮৩ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ৩৮০জন, যা পার্শ্ববর্তী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক কম। সময়মতো ব্যবস্থা নেয়ার সুফল পাচ্ছে কানাডা।
কানাডার প্রদেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী কিউবেক প্রদেশে আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৩৬০ জন। মারা গেছে ৫০ জন। এই প্রদেশের মন্ট্রিয়াল শহরের সবার্ধিক ৪ হাজারেও বেশী লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখানকার সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ম্যাশ পূর্বাভাস দিয়েছেন, সব নিয়ম কানুন মানলে এ মাস পর্যন্ত কিউবেক প্রদেশে আক্রান্তর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৩০ হাজার। আর মারা যেতে পারে এক হাজারেও বেশী মানুষ।
খুশির খবর হলো এখন রোগীদের বেশীরভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। তারপরেও থেমে নেই করোনার প্রকোপ। প্রতিদিন কানাডায় ৮০০-৯০০ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এই মরণব্যাধিতে।
গত ১৩ মার্চ পর্যন্ত কানাডাতে সবকিছু স্বাভাবিক ছিলো। অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-সব কিছু স্বাভাবিকভাবে চলেছে। এ সময় পর্যন্ত কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীসহ মোট ১৩০ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়। মারা যায় একজন।
এরপর থেকে সরকারের পক্ষ থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, চাইল্ড কেয়ার-সব কিছু দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা জারি করা হয়। সরকারি-বেসরকারি অফিস, শপিং মল, পার্ক-এমনকি মসজিদসহ উপাসনালয়ও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ক্লাস, পরীক্ষা অনলাইনে সম্পন্ন করছে। যারা ভিসা পেয়েছেন-কিন্তু কানাডাতে আসতে পারছেন না, গ্রীষ্মকালীন ক্লাস আগামী জুন থেকে তারা অনলাইনে করতে পারবেন। কানাডার বাইরে থেকে ক্লাস ছাড়াও পরীক্ষাও দিতে পারবেন অনলাইনে। অফিসের কাজও হচ্ছে অনলাইনে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অফিসের জরুরি মিটিং করা হচ্ছে।


নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দোকান ও ফার্মেসিগুলো খোলা রয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে (কমপক্ষে দুই ফুট) লোকজন কেনা কাটা করছে। অবশ্য এই পরিস্থিতিতে প্রায় সকল পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
এদিকে সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার কঠোর হয়েছে। করা হচ্ছে অর্থদন্ড। একসঙ্গে দু’জন লোক ঘোরাফেরা করলে ১ হাজার থেকে ২ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে। আইন শৃংখলা বাহিনী কঠোরভাবে নজরদারি করছে। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী ২ জুলাই পর্যন্ত সকল সামাজিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলা বন্ধ রাখতে হবে। যারা এই অমান্য করবেন তাদেরকে ১ হাজার ডলার থেকে ৬ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।

লেখক: গ্রাজুয়েট রিসার্চ এ্যাসিষ্টেন্ট, ইউনিভার্টি অব মন্ট্রিল,কানাডা এবং সহকারী অধ্যাপক, রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!