কুড়িগ্রামে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি: পানিতে ডুবে গেছে ধান

বিভাস প্রতিবেদক:
টানা বর্ষণের সাথে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ও রাজারহাট উপজেলাসহ কয়েকটি উপজেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, ভাঙ্গামোড় এবং রাজারহাটের ছিনাই, ঘড়িয়ালডাঙাসহ বিভিন্ন ক্ষেতের পাট, পাকা ধান, সবজিসহ সবধরণের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক তৈয়ব আলী, রহিম, তপন চন্দ্র জানান, শিলাবৃষ্টিতে তাদের পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একই ইউনিয়নের কৃষক সুরেশ, আলম ও শফি বলেন, শিলাবৃষ্টিতে তাদের ক্ষেতের অর্ধেক পরিমাণ পাকা ধান ঝড়ে গেছে। ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের কৃষক কার্তিক চন্দ্র সরকার জানান, শিলাবৃষ্টিতে তার তিন বিঘা ক্ষেতের পাকা ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশীদ জানান, শিলা বৃষ্টিতে ধান এবং পাটের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া গত সাত দিনের ব্যাপক বৃষ্টিপাতে ডুবে গেছে কুড়িগ্রামের নি¤œাঞ্চলের চলতি মৌসুমের উঠতি ইরি-বোরো ধান, পাট, ভুট্রাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি। বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়ার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এসব ফসলের। কোথাও হেলে পড়েছে ধান আবার কোথাও নষ্ট হয়েছে ভুট্রাসহ সবজি। ইতিমধ্যে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে মাঠের কাচা পাকা ইরি -বোরো ধান। কৃষক কিছু ধান কাটলেও বৃষ্টির কারণে মারাই করতে পারছে না। এসব ধান দীর্ঘদিন বৃষ্টিতে থাকায় কৃষকের উঠানেই নষ্ট হয়ে যাবার উপক্রম।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্র জানায়, গত ২০ মে রাত থেকে ২৬ মে বিকাল পর্যন্ত ৭ দিনের গড় বৃষ্টিপাত ৩০ দশমিক ৯৭ মিলিমিটার। এছাড়া জেলার কিছু কিছু উপজেলায় বৃষ্টিপাতের হার ছিলো অনেক বেশী। এর সাথে ছিলো ঝড়ো হাওয়া। বিশেষ করে নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিলো বেশী। এই দুই উপজেলার নি¤œাঞ্চলের বেশীরভাগ ধান ডুবে গেছে পানিতে।
নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুজ্জামান জানান, ঝড়োবাতাস এবং বৃষ্টিতে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমির ধানক্ষেত আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে দ্রুত পানি নেমে গেলে ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। আকাশ ভালো হওয়ার সাথে সাথেই কৃষককে পাকা ধান কাটার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জেলায় এবার ১লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে ইরি বোরো ধান। যা ১১ মে থেকে কাটা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত ৭৩ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। বাকি রয়েছে ২৭ ভাগ ধান। এসবে মধ্যে বেশির ভাগ রয়েছে বিআর ২৯ এবং কিছু উচ্চ ফলনশীল ধান। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, আম্পান পরবর্তি জেলায় কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!