ভেঙে যাচ্ছে সারডোব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ: ২০টি গ্রাম প্লাবিত হবার আশঙ্কা

আব্দুল খালেক ফারুক:
ধরলা নদীর ভাঙনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নে সারডোব গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪০০ মিটার অংশ ভেঙে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাঁধের বেশীরভাগ অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বাঁধটি ভেঙে গেলে নদী তীরবর্তি ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বন্যার কবলে পড়বে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধটি রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দিয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, ২০২৭ সালের ১২ আগষ্ট ধরলা নদীর তীরবতী সারোডোব এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং বাঁধের উপর পাকা সড়কের কয়েকটি স্থানে ভেঙে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এর পরের দু’বছরেও বাঁধ মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। গত বছর এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সমাবেশসহ অনেক দেন দরবার করলেও বাঁধ ও সড়ক মেরামত না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ে। পরে ভেঙে যাওয়া সারোডোব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির ৪০০ মিটার অংশ এলাকাবাসীর শ্রম ও অর্থে মেরামত করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড এরপর জিও টেক্সটাইল বিছিয়ে সাময়িক মেরামতের কাজ করে দেয়। কিন্তু চলতি বছর বর্ষা শুরুর পর থেকে বাঁধের মেরামত করা অংশে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ৪০০ মটিার বাঁধের অনেক অংশ ভেঙে বিলীন হবার পথে। প্রথম দফা বন্যাতেই বাঁধ বিলীনের অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে বাঁধটি টিকবে কীনা এ নিয়ে শঙ্কিত এলাকাবাসী।
সারডোব গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন ইউপি সদস্য মো: আশরাফ হোসেন জানান, বাঁধের ভাঙা অংশ ঘেঁষে ধরলার মুল স্রোত প্রবাহিত হওয়ায় শুরু হয়েছে ভাঙন। ফলে ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার আশঙ্কা করছে বন্যা ও ভাঙনের কবলে পড়ার।
এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান জানান, বাঁধের অর্ধেক অংশ ভেঙে গেছে। বাকীটা ভাঙলে এই এলাকার বাড়ি ঘর সব ভেঙে যাবে। আগে মতো বালু পড়ে ঢেকে যাবে উর্বর আবাদী জমি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাকিনুর ইসলাম জানান, বাঁধ রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কয়েক দফা যোগাযোগ করলেও তারা বরাদ্দ নেই বলে সাড়া দেয়নি। অবশেষে নির্বাহী প্রকৌশলী পরিদর্শন করার পর বাঁধ রক্ষার আশ^াস পাওয়া গেছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁধটি রক্ষার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ভাঙা অংশটি মেরামত করবো। যাতে বাঁধ রক্ষা পায় এবং মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি ইতোমধ্যে এখানে ৮০০ মিটার তীর সংরক্ষণ কাজের অনুমোদন পাওয়া গেছে। বর্ষার পরে সেই কাজ শুরু হবে।’

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!