কুড়িগ্রামে ঈদে ব্যস্ততা বাড়েনি কামারশালা গুলোতে

সাইমুল ইসলাম : বছর ঘুরে আসে কোরবানির ঈদ “ঈদ-উল-আযহা”। চারিদিকে কোরবানির পশু কেনার ধুম পড়ে যায়। কিন্তু  আসন্ন কোরবানির ঈদে করোনা সংক্রমণ ও তৃতীয় দফা  বন্যার প্রভাবে সেই আমেজটা নেই কুড়িগ্রামের মানুষের। জেলার কয়েকটি বড় পশুর হাটে হাটু পানি থাকায় তেমন ভাবে হচ্ছে না কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে স্বল্প পরিসরে এরই মধ্যে বিভিন্ন পশু ক্রয়ের সাথে পশু কোরবানির কাজে ব্যবহৃত দা, বটি, চাকু, কুড়াল, ছুরি, চাপাতিসহ সরঞ্জামও ক্রয় করছেন মানুষ( কোরবানি দানকারী) । সেটাও স্বল্পপরিসরে। যার কারণে কামার শিল্পীদের আয়ের পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম।     
জানা যায়,  বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানির ঈদের আগে কামার শিল্পীদের কাজের চাপ অনেকটা বেড়ে যায়, ব্যস্ত হয়ে পড়ে কামার শিল্পীরা। সেই সাথে তাদের আয় রোজগার ও অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু করোনা ও বন্যার কারণে এ বছর তেমন কোন ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে না কামারশালা গুলোয়। সারাবছর তেমন কাজ না থাকায় অপেক্ষায় থাকেন মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহার। কিন্তু কোরবানির সময় ঘনিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত তাদের সেই ব্যস্ততা চোখে পড়ছে না। 
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি বাজার, রাজারহাট উপজেলার ছিনাই একতা বাজার, গড়ের বাজার ও কামারপাড়া গ্রামে কামার শিল্পীরা কাজ না থাকার কারণে অন্য কাজ করছেন। কেউ বা বাড়ির কাজে সময় দিচ্ছেন। ভবেন্দ্র কর্মকার, বিষ্ণু কর্মকার,  নারায়ণ কর্মকার, সুকারু, পুতুল, সত্য কর্মকার,নিতাই চাঁন, ভানু কর্মকার, সুধীর কর্মকার ও মিলন। কাজ না থাকায় কয়েকদিন আগে ঢাকাতে পাড়ি জমান সুজন কর্মকার(৩০)।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি এবং  গড়ের বাজারের কামার শিল্পী  বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চাকু প্রতি পিস ৫০-৮০ টাকা, দা প্রতি কেজি ৪০০-৫০০ টাকা, চাপাতি (লোহার) প্রতি কেজি ৩৫০  টাকা থেকে শুরু, চাপাতি (স্প্রিংয়ের) প্রতি কেজি ৫০০ টাকা থেকে শুরু,  বটি প্রতি কেজি ১৫০ । গরু(গোরু) জবাই করা ছুরি আকার আকৃতি অনুসারে ৫০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করছে। আবার পুরনো যন্ত্রপাতি শান দিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। 
রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের  কারিগর বিষ্ণু কর্মকার  বলেন, “ঈদ উপলক্ষে কোন কাজ নাই৷ এখনো ১০ টাকা সাইত (আয়) করবার পাই নাই। একদিকে নাই কয়লা, একদিকে নাই আংরা। তারো আবার দাম বেশি। ২৫ টাকা কেজি। মানসের দুরগতি। মানসে চলে কেমন করি হামরায় চলি কেমন করি।” কাঁঠালবাড়ি বাজারের কামার শিল্পী ভবেন্দ্র কর্মকার বলেন, “গত বছর যে পরিমাণ আয় হইছে এবার তার অর্ধেকও হয় নাই।  এবার বেশি কাজ কাম নাই বলতেই চলে।”

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!