সাইমুল ইসলাম সাজু:
কুড়িগ্রামে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই গত তিনদিনের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ে মাটি লুটিয়ে পড়েছে শত শত একর জমির আমন ক্ষেত। সদ্য শীষ বের হওয়া ও আধাপাকা ধানক্ষেত মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ায় ভেঙে গেছে আমন চাষীর স্বপ্ন।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম, খোলারপাড়, ভানুরভিটা ও রাজারহাট উপজেলার দেবালয়, সিংহীমারী, মহিধর গ্রাম ঘুরে দেখা যায় দিগন্ত জুড়ে আমন ক্ষেত মাটিতে লেপ্টে আছে মাটির সাথে। বেশী ক্ষতি হয়েছে স্বর্ণ ধানের জাত ও হাইব্রিড জাতের ধানের ধান ক্ষেত। কৃষি বিভাগ এসব ধান ক্ষেতের আংশিক ক্ষতির আশঙ্কা করছে। পাশাপাশি মুলা, বেগুন, লালশাক, লাউশাক, কপিসহ বিভিন্ন সবচি ক্ষেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার শিবরাম খামার গ্রামের আব্দুল হক ব্যাপারীর দেড় একর ও তাজুর ইসলামের ৯০ শতক জমির আধা পাকা স্বর্ণ জাতের ধান ক্ষেত মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। ফকিরপাড়া গ্রামের হেলাল মিয়ার ৪০ শতক জমির ধান ক্ষেত পড়ে আছে পানি ও কাদায়। খোলারপাড় গ্রামের দিনাজ পাটোয়ারীর ৮০ শতক, সাইদুলের ৩০ শতক, রহমত মেম্বারের ৩৫ শতক সদ্য শীষ বের হওয়া ধানক্ষেত বাতাসে হেলে পড়েছে মাটিতে। এছাড়া ভানুরভিটা গ্রামের রতন শাহ, শহীদ মিয়া, মকবুল হোসেন আমনক্ষেত পড়েছে ক্ষতির মুখে। এসব কৃষকের অনেকেই ঋণ করে এবার আবাদ করেছিলো। তারা শেষ পর্যায়ে এসে আমনের এই ক্ষতি দেখে মুষরে পড়েছেন।
সদর উপজেলার শিবরাম খামার গ্রামের আবু সাঈদ তাজুল বলেন, ‘স্বর্ণ ধান লাগিয়ে ভালো ফলন পাবার আশা ছিলো, কিন্তু অসময়ের বৃষ্টি আর ঝড়ে ক্ষেতের ধান পুরোটাই মাটিতে পড়ে আছে। এ অবস্থায় ৩০-৪০ ভাগ ফলন কম হবে।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান, শনিবার পর্যন্ত প্রাথমিক হিসেবে জেলায় ৭৫০ হেক্টর জমি ধান মাটিতে পড়ে গেছে। ক্ষয়কাষতি নিরুপনের কাজ অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো জানান, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আধাপাকা ধানের আংশিক ক্ষতি হবে, তবে সদ্য ফুল আসা ক্ষেতের প্রায় পুরোটাই ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
কুড়িগ্রামে বৃষ্টি ও ঝড়ে আমনের ব্যাপক ক্ষতি লুটিয়ে পড়েছে আধাপাকা ধানক্ষেত
Facebook Comments
Share