বীজ সংকট ও চড়া দামের কারণে কুড়িগ্রামে আলু চাষীরা সংকটে

বিভাস প্রতিবেদক:
বাজারে আলুর উচ্চমূল্য দেখে আলু চাষে উৎসাহী হলেও বীজের চড়া দাম ও সংকটের কারণে আলু চাষ নিয়ে সংকটে পড়েছে কুড়িগ্রামের কৃষকরা। বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) ও বেসরকারি কম্পানির বীজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে রেকর্ড ৫২-৬০ টাকা দরে। এরপরেও চাহিদা অনুযায়ী মিলছেনা বীজ। বীজ, সারসহ সব উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় আলু চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন অনেক কৃষক।
কুড়িগ্রামে এবছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি। এজন্য আলু বীজের প্রয়োজন ৯ হাজার ৬৬৩ মে. টন বীজ। বিএডিসি মাত্র ৮০৪ মে. টন বীজ বরাদ্দ করেছে জেলার কৃষক ও ডিলারদেরকে। এছাড়া কৃষকরা হিমাগারে প্রায় ২ হাজার মে.টন বীজ বীজ সংরক্ষণ করলেও প্রায় ৬ হাজার মে.টন বীজের ঘাটতি রয়েছে।
কৃষকরা জানান, গত বছর বিএডিসির বীজ প্রতিকেজি ২৫-২৭ টাকা থাকলেও এবছর ৪৭-৪৮ টাকা সর নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এই বীজ ২২ টাকা কেজি দরে সংগ্রহ করা হয়েছে। তারপরেও নির্ধারিত দরের পরিবর্তে ৫২-৫৫ টাকার কমে মিলছেনা এই বীজ। বেসরকারি কম্পানি ও হিমাগারে সংরক্ষিত উন্নতমানের বীজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। এই দামে বীজ সংগ্রহ করা অনেক ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষকের জন্য কঠিন হয়ে গেছে। ফলে জমি তৈরী করার পরেও আলু চাষ নিয়ে অনিশ্চিয়তায় পড়েছেন বহু কৃষক।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামের আলু চাষী মহাব্বত আলী জানান, বিএডিসি কম দামে বীজ সংগ্রহ করে দ্বিগুণের বেশী দাম নির্ধারণ করেছে। তারপরেও ৭-৮ টাকা বেশী দরে বীজ কিনতে হচ্ছে। সারের মুল্যও বস্তাপ্রতি ৮০-১০০ টাকার বেশী দরে কিনতে হচ্ছে। একই গ্রামের কৃষক বাবুল আখতার জানান, বীজের অস্বাভাবিক মূল্য ও অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ার ফলে এবছর প্রতি একর জমিতে ২০-২৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। ফলে আলুর ন্যায্য দাম না পেলে লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
অপরদিকে পরের বছর রোপন করার জন্য বীজ উৎপাদনের জন্য যারা আমদানিকৃত বিভিন্ন জাতের ভিত্তি বীজ রোপন করতে চান-দ্বিগুণ দামের কারণে তারাও পড়েছেন বিপাকে।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারের বীজ বিক্রেতা আবু রায়হান জানান, বিএডিসি ডিলারদের যে সামান্য বরাদ্দ দিয়েছে তা দিয়ে কৃষকদের চাহিদা পূরণ সম্ভব হচ্ছেনা। বাইরের জেলা থেকে বীজ সংগ্রহ করে আনতে গিয়ে খরচ পড়ছে আরো বেশী। ফলে কৃষকরা আলু বীজ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মো: মঞ্জুরুল হক জানিয়েছেন, এবছর সংরক্ষিত আলু বীজের চেয়ে চাহিদা বেশী। বাইরের জেলা থেকে আলু বীজ এনে কৃষকরা বীজের ঘাটতি পুরণ করবে বলে জানান তারা।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!