বিভাস প্রতিবেদক:
শরিয়াভিত্তিক বিনিয়োগের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার প্রায় ৩ হাজার গ্রাহকের ৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে এবং প্রতারকদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবীতে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে প্রতারিত গ্রাহক ও মাঠকর্মীরা। রবিবার সকালে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলার কয়েকশ নারী পুরুষ অংশ নেয়।
এসময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রতারিত মাঠকর্মী ওমর ফারুক, নুর মোহাম্মদ, গ্রাহক দেওয়ান নজরুল ইসলাম, কলেজ শিক্ষক আব্দুল কাদের ও আশরাফ রাসেল বক্তব্য রাখেন।
তারা অভিযোগ করেন, আল হামীম পাবলিক লিমিটেড নামে একটি কম্পানি বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের নামে সাধারণ মানুষের কাছে অর্থসংগ্রহ করে মেয়াদ শেষে অফিস ও কর্মকান্ড গুটিয়ে নিয়েছে। কাগজপত্রে ইসলামি শরীয়া মোতাবেক ব্যবসা পরিচালনা ও লাভ লোকসানের ভিত্তিতে মুনাফা দেয়ার কথা বলা হলেও কর্মীরা দ্বিগুণ লাভের কথা বলে প্রলুব্ধ করেন সাধারণ মানুষকে। এমনকি টাকা গ্রহনের পর মাত্র ১৫ টাকার স্ট্যাম্পে বিনিয়োগ চুক্তিনামা দেখিয়ে ধোঁকা দেয়া হয় সরলপ্রাণ মানুষদের। বর্তমানে কম্পানির কোন অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছেনা।
উলিপুর উপজেলার কামাল খামার গ্রামের মাঠকর্মী নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘প্রতারণার বিষয়ে উলিপুর থানায় একটি এজাহার দেয়া হলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।’ ৩৬ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রতারণার শিকার ফুলবাড়ী উপজেলার দেওয়ান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কম্পানির প্রচারপত্রে বড় বড় আলেম ওলামাদের নাম দেখে এবং কয়েকজনের কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বিনিয়োগ করি। এখন তাদের কোন পাত্তা পাওয়া যাচ্ছেনা।’
প্রতারিক গ্রাহক ও মাঠকর্মীরা কম্পানির এমডি এনামুল কবীর ও সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেয়ার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করে।
এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ সুপার জান্নাত আরা বলেন, ‘ভুয়া কম্পানির নামে প্রতারণা করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি সর্ব্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। ’
আল হামীম কম্পানির এমডিসহ প্রতারকদের গ্রেপ্তারের দাবীতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ
Facebook Comments
Share