পাঁচ ছেলে থাকার পরও সন্ধ্যা রাণীকে দেখার কেউ নেই

সাইমুল ইসলাম সাজু:
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা সন্ধ্যা রাণী। বয়স প্রায় ৯০ বছর। বয়সের ভারে হাঁটতে পারেন না ঠিকমত। অন্যের জায়গায় বসবাস করে পাঁচ সন্তানকে বড় করেছিলেন বৃদ্ধা মা সন্ধ্যা রাণী। পাঁচ সন্তানের সবাই উপযুক্ত। সেই সন্তানদের সবার রয়েছে সংসার। সংসারে রয়েছে নাতি নাতনি। সবাই এখন কাজকর্ম, ব্যবসা-বাণিজ্য করে প্রত্যেকের পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে থাকলেও বৃদ্ধা মাকে দেখার কেউ নেই। বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব কেউ নিতে চান না। অনেক আগেই সন্তানরা তাকে একঘরে করে দিয়েছেন।
ছোট একটি খুপরি ঘরে কোনরকমে দিনাতিপাত করছেন। অনাহারে, অর্ধাহারে খুপরি ঘরে দিন কেটে যায় বৃদ্ধা মায়ের। সেদিকে কোন সন্তানের খোঁজ খবর নেই। মায়ের বিধবা ভাতার টাকা উঠলেই মায়ের কদরের শেষ থাকে না। বিধবা ভাতার টাকা, শীতের কম্বল, করোনা কালীন সহায়তা, চাল ডালসহ সব সরকারি সহায়তা ছেলে-ছেলে বউ ভাগাভাগি করে নিলেও বৃদ্ধা মাকে দেখেন না কেউই। আপন পাঁচ ছেলেদের সবার কাছেই এখন বোঝা হয়ে উঠেছে ওই বৃদ্ধা। কেউ তাকে আর রাখতে চায় না। নিতে চায় বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব। নিরুপায় বৃদ্ধা পরিচিত কারো দেখা পেলেই জানান তার এ দুঃখের কথা।
বৃদ্ধার ছেলে ঢোল গোবিন্দ জানান, “আমি খুবই দরিদ্র মানুষ। দিনে আনি দিনে খাই। আমরা দুই মানুষ অন্যের কাজ করি সংসার চালাই। কাজ শেষ করি তেমন কোন সময় থাকে না। যার কারণে মার তেমন দেখাশুনা করবার পাইনা।”
বৃদ্ধা সন্ধ্যা রাণী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “বেটার মন চাইলে খাবার ডাকায় না চাইলে উপ্যাস থাকোং। মোর আইজ কাইও নাই। আপন বেটা মোর খোঁজ নেয় না।”
কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাহফুজার রহমান বাবু বলেন, “যেকোন সরকারি সহায়তা আসলে আগে তাকেই দেই। ব্যক্তিগত উদ্যোগেও তার পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। শুনেছি তার ছেলেরা নাকি তাকে দেখাশোনা করেন না।”

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!