কুড়িগ্রামে গ্রাম আদালতে সাড়ে তিন বছরে সাড়ে দশ হাজার মামলার নিষ্পত্তি

আব্দুল খালেক ফারুক:
গ্রাম আদালতের ধারণা সাধারণ মানুষের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। এই আদালতে স্বল্প সময় ও খরচে ছোট-খাট বিরোধের নিষ্পত্তি হচ্ছে। গত সাড়ে তিন বছরে কুড়িগ্রাম জেলায় গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সাড়ে ১০ হাজার মামলার নিষ্পতি হয়েছে।
বুধবার কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত সম্পর্কে এই কর্মশালায় এই তথ্য জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে ‘সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমুহের অংশগ্রহনে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক এই সভায় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রধান অতিথি ছিলেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গ্রাম আদালতে বিচার প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে জেলায় ১০ হাজার ৬৬২টি মামলা গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে বিচারপ্রার্থীদের সরাসরি আবেদনের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৯৯৮টি। বাকী মামলাগুলো থানা ও আদালত থেকে প্রেরিত। এ সময়ে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ১০ কোটি ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়।
কর্মশালায় আরো জানানো হয়, সারাদেশে ১২৮টি উপজেলার ১ হাজার ৮০টি ইউনিয়নে একটি করে গ্রাম আদালত স্থাপন করা হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলায় ১২১টি ইউনিয়নে আদালত স্থাপনের কাজ চলছে। গত এক বছরে দেশে এক লাখ ৫৪ হাজার মামলা গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিস্পত্তি হয়েছে। এতে প্রতি মামলা নিস্পত্তিতে গড়ে সময় লেগেছে মাত্র ২২ দিন।
গ্রাম আদালতে যেকোন বিচারপ্রার্থী ফৌজদারি মামলায় মাত্র ১০ টাকা ও দেওয়ানি মামলায় ২০ টাকা ফি দিয়ে আবেদন করা ছাড়া আর কোন খরচ নেই। ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়াও বাদী ও বিবাদীর দুজন করে সদস্য নিয়ে এই আদালত গঠিত হয়। গ্রাম আদালতে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা নিস্পত্তি করা যায়।
কর্মশালায় বিচারপ্রার্থীদের সময় ও অর্থ বাঁচাতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণার উপর গুরুত্বরোপ করা হয়।
কুড়িগ্রামের এনডিসি হাসিবুল হাসানের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক হাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. মো: হাবিবুর রহমান, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্লোল দত্ত, সাংবাদিক ছানা লাল বকশি প্রমুখ।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!