ক্লোজআপ তারকা সাজুর শাস্তি চান তার মা

সাজেদুল করিম সুজন:
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলাধীন পান্ডুল ইউনিয়নের তেলী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ক্লোজআপ ওয়ান তারকা শিল্পী সাজু আহমেদ কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে তার মা রাণীজন বেওয়া। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেন, ‘এসএমএস করতে জমি বন্ধক রাখি। ১৬ লাখ টাকার জমি বন্ধক রাখি। আবার সেই জমি খুলি। সেই জমি সে দাবী করে। বখাটে লোকদের বুদ্ধি শুনিয়া আমাকে নিযার্তন করে। শক্ত পিড়া দিয়া আমাকে আঘাত করে। আমার কোলের সন্তানের অত্যাচার আমি সহ্য করতে পারিনা। যখন তখন মারতে আসে। আমার উপর অত্যাচার অবিচার করার জন্য ওই ছেলের বিচার চাই। তার যাবজ্জীবন জেল চাই।’
জানা যায়, ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সাজু আহমেদ শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য তার পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। তার মাতা রাণীজন বেওয়া সন্তানকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জমি বন্ধক রেখে সেই টাকা সাজুর হাতে তুলে দেন। মায়ের আশা ছিল সন্তান প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের সকল বন্ধক জমি উদ্ধার হবে এবং পরিবারের স্বচ্ছলতা ও শান্তি আসবে। এটাই ছিল সাজুর মায়ের স্বপ্ন। কিন্তু সাজু আহমেদ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হলেও তার পারিবারের বন্ধক রাখা জমিগুলো আর উদ্ধার করা হয়নি।
বিভিন্ন উপায়ে টাকা যোগার করে সাজুর মা রাণীজন বেওয়া বন্দকী জমির কিছু অংশ উদ্ধার করে উক্ত জমিতে চাষাবাদ করছে। সম্প্রতি সময়ে সাজু তার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ চাইলে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে গত ১৬ আগস্ট শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে এক বছরের জন্য সকল জমি তার মাতা রাণীজন বেওয়ার নিয়ন্ত্রণে হালচাষ করার মৌখিক সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে পান্ডুল ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সাজু আহমেদ নিজেকে প্রার্থী হিসেবে এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। টাকা পয়সার প্রয়োজনে নিজের পৈত্রিক জমি বিক্রি করতে না পেরে সাজুর সাথে তার মায়ের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে গত শুক্রবার দুপুরে পরিবারের লোকজনের সাথে সাজুর সামান্য কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজুর নির্যাতনের শিকার হয়েছে তার মা রাণীজন বেওয়া। বর্তমানে সাজুর মা কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ, সাজু আহমেদ জেলা আওয়ামীলীগের একজন সদস্য। তাকে মাকে নিযার্তন করার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নেতা—কমীর্দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!