কুড়িগ্রামে আল হামীমের প্রতারণা মামলা সিআইডিতে

বিভাস প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামে শরীয়াভিত্তিক ব্যবসায় আকর্ষণীয় মুনাফা দেয়ার লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি তদন্ত শুরু করেছে কুড়িগ্রাম সিআইডি। সিআইডির পরিদর্শক এটিএম শিফাতুল মাজহার শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতারিত আড়াইশ গ্রাহকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় প্রমাণিত সংগ্রহ করা হচ্ছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর কালের কণ্ঠে ‘ধোঁকায় বোকা সরল মানুষ’ শীর্ষক প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে অন্যান্য গণমাধ্যমেও সংবাদটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয় আল হামীম পাবলিক লিমিটেড কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় চারটি ক্যাটাগরিতে সদস্য সংগ্রহ করে। কাগজপত্রে ইসলামি শরীয়া মোতাবেক ব্যবসা পরিচালনা ও আকর্ষণীয় মুনাফা দেয়ার কথা বলে ৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কম্পানির এমডি মাওলানা মুহাম্মদ এনামুল কবীর কহিনুর বিভিন্ন পযার্য়ে কর্মকতার্ ও মাঠকমীর্দের সহায়তায় ধর্মপ্রাণ মানুষকে টার্গেট করে হাতিয়ে নেন এই টাকা।
কম্পানির মাঠকমীর্ উলিপুর উপজেলার কিসামত মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা উমর ফারুক ২৮ জানুয়ারি উলিপুর থানায় কম্পানির সাবেক তিন কর্মকতার্র বিরুদ্ধে ৮০ লাখ ৫৭ হাজার টাকা প্রতারণামুলকভাবে আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন। মামলার আসামীরা হলেন, আল হামীমের সাবেক জেলা কর্মকতার্ মাওলানা আনিছুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম ও মাওলানা আছয়াদুর রহমান আপেল। এক মাস পর কুড়িগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নিতে আসলে আদালত তাদের জামিন বাতিল করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ৯দিন পর তারা জামিনে বেড়িয়ে আসেন।
গত ৬ জানুয়ারি জেলা প্রশাসন থেকে এই প্রতারণার ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তারা তিন মাস পর দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে প্রতারণার বিষয়টি উল্লেখ প্রতিবেদন দাখিল করেন। জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পত্র লিখে। কম্পানির এমডি মাওলানা মুহাম্মদ এনামুল কবীর কহিনুর ও তার সহযোগীদের বিচারের দাবীতে কুড়িগ্রাম শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে প্রতারিত শত শত নারী—পুরুষ।
মামলার বাদী উমর ফারুক জানান, জামিন পাওয়ার পর একই ধরণের সংস্থার নামে আমানত সংগ্রহ কার্যক্রম চালু রেখেছেন মাওলানা মাওলানা আনিছুর রহমান। প্রতারিত মানুষ কোন সুবিচার পাচ্ছিলনা। তাই তারা মামলা পরিচালনার জন্য সিআইডির কাছে আবেদন করেন।
আল হামীমের গ্রাহক উলিপুর উপজেলার কামাল খামার গ্রামের জোসনা বেগম বলেন, ‘মেলা দিন হইল ট্যাকা পইসা কিছুই পাইলোং না। বিচারও হইলনা। এলা শুইনব্যার নাগছি সিআইডি বোলে মামলা নিছে। এবার যদি হামরা বিচার পাই।’ কিসামত মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহজালাল জানান, সিআইডি মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করলে প্রতারিত মানুষ হয়তো ন্যায় বিচার পাবে।
কুড়িগ্রাম সিআইডির পরিদর্শক এটিএম শিফাতুল মাজহার জানান, সিআইডির হেড কোয়াটার্র থেকে মামলাটির অনুমোদন আসে গত সপ্তাহে। এরপর তারা তদন্ত শুরু করেছেন এবং দ্রুততম সময়ে রিপোর্ট প্রদান করবেন।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!