কুড়িগ্রামে অসময়ের ঝড় বৃষ্টিতে ইট ভাটার ক্ষতি ১২ কোটি টাকা

বিভাস প্রতিবেদক:
মাঘের শেষের প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে ইট ভাটা মালিকদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। পোড়ানোর জন্য থরে থরে সাজানো কাঁচা ইট ঝড় বৃষ্টির তান্ডবে পড়ে লুটিয়ে পড়েছে মাটিতে। অনেক ইটভাটার ৭০—৮০ শতাংশ কাঁচা ইট লেপ্টে আছে মাটির সঙ্গে। আর এতেই জেলার ১২০টি ভাটা মালিকের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ কোটি টাকা।
শুক্রবার সকালে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। বিকালে শুরু হয় ঝড়ো বাতাস। রাতে আবার নামে প্রবল বৃষ্টি। রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দেয়া তথ্যমতে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৫০ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
জেলা ভাটা মালিক সমিতির দেয়া তথ্য মতে, জেলায় ইটভাটার সংখ্যা ১২০টি। এরমধ্যে ৫০টি ইটভাটায় ২৫ লাখ করে, ৫০টিতে ১৫ লাখ করে আর বাকী ২০টিতে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার দুপুরে সরেজমিন উলিপুর উপজেলার মীনা বাজারের পাশে অবস্থিত এইচএমবি ইট ভাটায় গিয়ে দেখা যায়, লাখ লাখ কাঁচা ইট কোনটি কাদায় পরিণত হয়েছে, কোনটি সারির উপর ভেঙে পড়ে আছে। ভাটাজুড়ে থৈ থৈ করছে পানি। ভাটা কর্তৃপক্ষ দুটি শ্যালো মেশিন লাগিয়ে পানি সেচে অন্য জমিতে ফেলছে। ম্যানেজার নুর ইসলাম জানান, এই ভাটায় প্রায় ১৫ লাখ ইট নষ্ট হয়েছে। আবার বৃষ্টি না হলেও পনের দিনের আগে ভাটার কার্যক্রম শুরু করা যাবেনা। এতে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে মালিক। উপজেলার আনন্দবাজারের পাশে অবস্থিত ইটভাটা এমএমবির ম্যানেজার আব্দুল মোত্তালেব সরকার জানান, এই ভাটায় ৮—১০ লাখ ইটের ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে ইট তৈরী সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই ইটের দাম স্বাভাবিকভাবে বাড়বে। এই ভাটার কর্মচারী আহাম্মদ আলী জানান, বৃষ্টি ও ঝড়ে ভাটার বিপুল পরিমাণ ইট নষ্ট হবার পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গেছে শতাধিক শ্রমিকের কাজ। কাজ কবে শুরু হবে তা অনিশ্চিত। নাগেশ্বরীর কুড়িগ্রাম ব্রিকস নামে একটি ভাটার ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম জানান, এই ভাটায় ৭০ ভাগ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। বাতাসের কারণে ইটের স্তূপ ভেঙে ক্ষতি হয়েছে বেশি।
সদর উপজেলার জিএমবি ইটভাটার ম্যানেজার মিলন মিয়া জানান, ক্ষতি পোষাতে মালিক হয়তো ইটের দাম বাড়াবে। এতে গ্রাহকদের ঘাড়েই পড়বে বাড়তি দামের বোঝা। বর্তমানে প্রতি হাজার ইট বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার ৭শ টাকা দরে।
এদিকে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির আহবায়ক লুৎফর রহমান বক্শী জানান, প্রশাসন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ ভাটা মালিকদের পাশে না দাঁড়ালে তারা বিপুল পরিমাণ লোকসান দিতে বাধ্য হবেন।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!