কুড়িগ্রাম ডিসি অফিসে বিশাল ছাদবাগানে ফল ও ফুলের সমাহার

বিভাস প্রতিবেদক:
ছাদের উপর আম, কমলা, মাল্টা, ড্রাগনসহ নানা ফলের সমাহার। রয়েছে বিলুপ্ত ও বিরল প্রজাতির নানান বৃক্ষ। প্রায় একশ প্রজাতির সাড়ে ৬শ গাছ নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাযার্লয়ের ছাদে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন ছাদবাগান। প্রায় ৪০ হাজার স্কয়ার ফুটের বিশাল এই ছাদ বাগান অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে ছাদ কৃষিতে আগ্রহী বৃক্ষ প্রেমিকদের।
জেলা প্রশাসকের কাযালয়ের ১৮টি শাখা ও কয়েকটি দপ্তর নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাযার্লয়ের দুটি ভবন বিশিষ্ট বিশালাকারের ছাদটি পড়ে ছিল অব্যহৃত অবস্থায়। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই ছাদকে বৃক্ষশোভিত সবুজময় ছাদে পরিণত করার জন্য গত এক বছর ধরে চলছে প্রচেষ্টা। ইতোমধ্যে ছাদে লাগানোর গাছে ফুল ও ফল ধরেছে। ফল দিয়ে আপ্যায়ন করা হচ্ছে অতিথিরে। এই ব্যতিক্রমী ছাদ বাগান দেখতে ছুটে আসছেন অনেকেই। ছাদ কৃষির প্রেরণা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন ঘরে।
সরেজমিন দেখা গেছে, এই ছাদ বাগানে সংগ্রহের তালিকায় রয়েছে, ব্লাকবেরি, কিউজাই, রেড পালনারসহ ৮ ধরণের আম, দার্জিলিং, ভুটানি ও কানপুর ও তৃপ্তি জাতের কমলা, বারি মাল্টা, বারি, থাই, ষ্টবেরি ও গোল্ডেন জাতের পেয়ারা, থাই সাদা জাম, বারোমাসি আমরা, ভাগোরা ও পাকিস্তানি জাতের ডালিম, লেবু, থাই কলা ও ড্রাগনসহ বিরল জাতের নানা ফলের গাছ। প্রায় সাড়ে ছয়শত টবে চারা লাগানো হয়েছে। অনেক চারা বড় হয়ে ফলবতি হয়েছে। গোলাপসহ নানা ফুল সৌরভ ছড়াচ্ছে ছাদজুড়ে। কর্মকতার্ ও কর্মচারি ছাড়াও দর্শনার্থীরা নতুন নতুন গাছের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন এই ছাদ বাগানে এসে। সুস্বাদু ফলের স্বাদ নিচ্ছেন কেউ কেউ। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের তত্বাবধানে গড়ে উঠছে কুড়িগ্রামের সর্ববৃহৎ ছাদ বাগানটি।
কুড়িগ্রাম আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুর বখত মিয়া বলেন, ‘মাত্র এক বছরের মধ্যে যে ছাদ কৃষি এভাবে ফল দিতে পারে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এটা উপকারে আসতে পারে, তার অনন্য দৃষ্টান্ত এই ডিসি অফিসের ছাদ বাগান।’ সংগীত শিল্পী দেবাশীষ রায় জানান, এতো বড় ছাদ বাগান কুড়িগ্রামে নেই। এই সুন্দর বাগানে ঘুরে তিনি উদ্বুদ্ধ হয়েছেন, ভবিষ্যতে ছাদ বাগান করার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
বিশালাকারের এই ছাদ বাগানে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে নানা জাতের ফল, ফুল, সবজি ও ওষুধি বৃক্ষ। একটি ছাদে শুধুমাত্র ড্রাগন ফলের বাগান করা হয়েছে। গাছে ফুল এসে এই বাগানে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে বেশ কয়েকজন শ্রমিকের। এদের মধ্যে রজব আলী নামে একজন শ্রমিক বলেন, ‘এক বছর ধরে এই বাগানে কাজ করছি। আমাদের কাজের ব্যবস্থা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানিয়েছেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাযার্লয়টি অনেক বড় আয়তনের। বিশাল ছাদে শখের বসে ছাদ কৃষি শুরু হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে নানা জাতের ফল ও ফুলসহ বিভিন্ন গাছের চারা সংগ্রহ করে লাগানো হচ্ছে। কর্মকতার্ ও কর্মচারি সবার আগ্রহের কারণে আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে এই বাগান। এরকম একটি ছাদকে কাজে লাগিয়ে এতো বড় ছাদ বাগান করা সম্ভব—এই অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্যই এই বাগানটি করা হয়েছে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!