কুড়িগ্রামে পানি কমেছে তবে কমেনি ভোগান্তি

বিভাস প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে ধরলা ও দুধকুমারের পানি। তবে অর্ধশত চরের নিচু এলাকা এখনও নিমজ্জিত রয়েছে বন্যার পানিতে। নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম সদর ও উলিপুর উপজেলার চরাঞ্চলে পানিবন্দী রয়েছে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। প্লাবিত রয়েছে বিস্তৃর্ণ এলাকার পাট, ভুট্রা, বীজতলা ও সবজিসহ ফসলের ক্ষেত। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গবাদী পশুর খাদ্য সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। কাজ করতে না পারায় আর্থিক সংকটে পড়ছে দিনমজুর পরিবারগুলো।
শনিবার সরেজমিন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলার চর সারডাবে গিয়ে দেখা গেছে, পানি শুরু করলেও এখনও অনেক ঘরবাড়িতে পানি রয়েছে। এই চরের খোকা মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন নামে দুই দিনমজুরের ঘরে এখনও কোমর সমান পানি। ঘরে তালা দিয়ে তারা আত্মীয়ের বাড়িতে চলে গেছে। কৃষক আব্দুল আউয়াল জানান, তার এক বিধা ব্রি ধান—২৯ এর ক্ষেত পাকার আগেই পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। পঁচা বিবর্ণ শীষগুলো ভেসে উঠেছে। ৭ হাজার টাকা এই ধান আবাদ করতে খরচ হয়েছে তার। সব লোকসান। এর পাশাপাশি ৫০ শতক পাট নষ্ট হয়েছে, ভেসে গেছে খড়। পালিত গরুর খাদ্য সংকট প্রকট হওয়ায় বিক্রির কথা ভাবছেন বলে জানান তিনি। চরের বাসিন্দা ফর্দি মিয়া জানান, দুই সপ্তাহেরও বেশি পানিতে ভাসলেও কোন ত্রাণ সহায়তা পাননি এতোদিন। শনিবার বিকালে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চরের কিছু পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। নৌকার মাঝি নুর ইসলাম জানান, চরের প্রায় সবার হাঁস মুরগী ভেসে গেছে। এখন গরু ছাগলের খাবার নিয়ে কষ্ট শুরু হয়েছে।
সদর উপজেলার হলোখানা ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রেজা বলেন, এই ইউনিয়নে প্রায় ৩ হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরমধ্যে ২ হাজার ১শত পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের হাতে কাজ নেই। তাই ঈদের আগে অন্যান্য বছরের মতো ভিজিএফ চাল দিলে বানভাসিদের ঈদের আনন্দের শরীক করা যেত।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!