এন্টিবডি দিয়ে করোনা চিকিৎসার দাবী মীর্জা নাসির উদ্দিনের

হুমায়ুন কবীর সূর্য্য: করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় এক নতুন পথের সন্ধান দিয়েছেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মীর্জা নাসির উদ্দিন। তিনি দাবী করেছেন, সুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে রক্ত বা প্লাজমা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করানো হয় তাহলে তার দেহে প্রচুর পরিমাণে এই স্মৃতিকোষ ও এন্টিবডি তৈরী হবে। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
করোনার মহামারী নিয়ে বিশে^র ১৯৯টি দেশে এখন চলছে আতংক। গবেষণা চালাচ্ছে মুক্তির উপায় নিয়ে। এখনও আবিস্কার হয়নি প্রতিষেধক টিকা। তারপরও চলছে বাঁচার অদম্য চেষ্টা। প্রফেসর মীর্জা নাসির উদ্দিন তাঁর গবেষণার ফলাফল নিয়ে শনিবার কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। ব্যক্তিগত দায় থেকে তার এ চেষ্টা। দেশী-বিদেশী নানা বই ঘেটে এবং বিভিন্ন দেশের মেডিকেল জার্নাল ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন ইতিবাচক রিপোর্ট তুলে ধরেন এ সংবাদ সম্মেলনে।
তাঁর দাবি সরকার মেডিকেল সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গবেষণা করলে আমরা দ্রুততম সময়ে করোনা আক্রান্তদের সুস্থ্র করা সম্ভব। তিনি বলেন-মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অনাক্রম্যতা সৃষ্টি করতে পারলে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা রক্তের শে^তকণিকার লিস্ফোসাইটের ’বি’ কোষ এবং ’টি’ কোষ, মেমরী সেল এবং রক্তের প্লাজমার গামা গ্লোবিউলিন সংশ্লিষ্ট। এ কারণে শিশুকালের কিছু রোগ যেমন-হাম, মামসপক্স, চিকেনপক্স প্রভৃতি জীবনে একবারই হয়। ভ্যাকসিনেশন এই নীতির ভিত্তিতেই উদ্ভব হয়েছে। এ নীতির ভিত্তিতেই বলা যায় করো আক্রান্ত কোন ব্যক্তি যদি সুস্থ হয় তাহলে তার দেহে প্রচুর পরিমাণে এন্টিবডি ও স্মৃতিকোষ তৈরী হয়। এই সুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে রক্ত বা প্লাজমা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করানো হয় তাহলে তার দেহে প্রচুর পরিমাণে এই স্মৃতিকোষ ও এন্টিবডি তৈরী হবে। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। তবে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের মাধ্যমে এবং রক্ত সঞ্চালনের নীতি পুরোপুরি মেনে। ভ্যাকসিন আবিস্কারক এডওয়ার্ড জেনার এর চিকিৎসা পদ্ধতির মূল নীতিও এরুপ।
চীন, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, জার্মানীসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশে নামিদামি পত্রিকা ও জার্নালের রেশ টেনে তিনি দাবি করেন ওইসব দেশে অনেক রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব হয়েছে এই পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে। রেফারেন্স হিসেবে ১৪ ফেব্রুয়ারির চায়না থেকে প্রকাশিত লাইভ সাইন্স, ৮ মার্চ ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত দ্য সান, ২০ মার্চ প্রকাশিত লস এঞ্জলেস টাইমস, ২৪ মার্চের নেচার ও নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা, ২৫ মার্চের এবিসি উদ্ধৃতি টেনে আনেন তিনি।
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে পড়াশুনা করা প্রফেসর মীর্জা নাসির উদ্দিন দাবি করেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বিজ্ঞানী ও গবেষকগণ এই পদ্ধতি অনুসরণ করে দ্রুত করোনা প্রতিষেধক আবিস্কার করা গেলে বাংলাদেশে মৃত্যুহার কমে যাবে। মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!