কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলের হাট-বাজার চলছে স্বাভাবিক

বিভাস প্রতিবেদক: কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র আর দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর তীরবর্তি চার শতাধিক চরের অধিকাংশ চরে করোনা ভীতি উপেক্ষা করে স্বাভাবিক কাজ-কর্ম চলছে। দুর্গম এলাকার হাট-বাজারে জনসমাগম হচ্ছে যথারীতি। বরং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করা বিপুল সংখ্যক মানুষ বাড়ি ফিরে আসায় জমজমাট এসব হাট-বাজার। মরণঘাতি রোগ সম্পর্কে চরাঞ্চলের মানুষের সচেতনার অভাব আর স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের প্রচারণার অভাবে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
ধরলা তীরবর্তি আরডিআরএস, বাংলাবাজার, খোকারবাজারসহ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে দোকান-পাঠ আগের মতোই খোলা আছে। আরডিআরএস বাজারের গালামাল ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন জানান, দোকান পাঠ আগের মতোই খোলা। ঢাকা থেকে অনেকেই বাড়িতে চলে এসেছে, তাই জনসমাগম আর কেনাকাটা অনেক বেড়েছে। স্থানীয় সংগঠন সারডোবের আলো একদিন মাইকিং করেছে। তবে সাধারণ মানুষ তাতে সচেতন হয়নি। খোকার বাজারের (রোহিঙ্গা বাজার) মুদি দোকানদার আশরাফুল বলেন, ‘ছোট বাজার, তাই কেউ আসেনি। আমরাই মসজিদে লোকজনকে সজাগ করেছি।’ সারডোব গ্রামের সমাজকর্মী এনামুল হক জানান, চরের মানুষ কৃষি কাজ, মাছ ধরা, হাট-বাজার সব স্বাভাবিকভাবে করছে। বেশীরভাগ লোক মনে করছে করোনা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবেনা।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রহিমুদ্দির রিপন জানান, ব্রহ্মপুত্র পারের যাত্রাপুর, নারায়নপুর ও মোল্লারহাট হাটের দিন সপ্তাহে দু’দিন যথারীতি চলছে। তবে লোকজন দ্রুত খরচ করে করে বাড়িয়ে ফিরতে। তিনি আরো জানান, ঢাকা থেকে আসা বিপুল সংখ্যক কর্মজীবীকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে গেছে। এরা নিয়ম-কানুন মানতে চান না। হাটে-বাজারে-রাস্তায় ঘোরাঘুরি আর আড্ডা দেন।
নাগেশ্বরীর কচাকাটায় করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে নিরাপদ দূরত্ব মানছেন না অনেকেই। প্রশাসনের গতিবিধি লক্ষ্য করে সকাল, বিকাল ও সন্ধ্যায় হাট বাজারের কিছু মোড়ে মোড়ে ও পাড়া মহল্লার অলিতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রেখে চলছে আড্ডাবাজী। সে আড্ডায় বাদ যায়না শিশু বুড়োসহ সদ্য কিংবা দু’একদিন আগে ঢাকা ফেরত ব্যক্তিও। আবার কোথাও কোথাও শিশু কিশোর ও যুবকদের ভলিবল ও ক্রিকেট খেলতে দেখা যায়।
সরেজমিনে কচাকাটার গাবতলা বাজার,মাদারগঞ্জ,নায়কের হাট,কচাকাটা বাজার,কচাকাটা বাস স্ট্যান্ড, গোলের হাট ইউনিয়ন পরিষদ মোড়, সুবলপাড়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। বাজারগুলোতে সরকারি নির্দেশনার বাইরে কিছু দোকানদার দোকানের শাটার খুলে কখনো বা শাটার বন্ধ রেখে রড সিমেন্টের দোকান,কাপড়ের দোকান,কৃষি পণ্যের দোকান(সার তেল), ট্রেইলার্স, হেয়ার ড্রেসার(সেলুন), হোটেলসহ ও কিছু মুদির দোকানে চা, পান, সিগারেট বিক্রি করতে দেখা যায়। ফলে করোনা সংক্রমণের আতংকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কচাকাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন-অর-রশীদ বলেন,বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে।
নাগেশ^রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহমেদ মাসুম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন মানুষজনকে সচেতন হতে হবে। আমরা আসলে কাউকে আঘাত করার জন্য যাচ্ছিনা। কিন্তু আইন কার্যকর করার জন্য যতটুকু সম্ভব আমরা জনগনকে সচেতনার মাধ্যমে এই কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যাচ্ছি।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!