কলকাতার মাষ্টার মশাই বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদ

বিভাস প্রতিবেদক:
কলকাতার পার্ক ষ্ট্রিটের বেলফোর্ড লেনের ভাড়া বাড়িতে থাকতে বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। এলাকার কেউ থাকে উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখেনি। অথচ মাষ্টার মশাই নামে পরিচিত ব্যক্তিই বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদ! বিশ^াস করতে কষ্ট হচ্ছে এলাকাবাসীর।
গত ৭ এপ্রিল ঢাকার মীরপুরে বঙ্গবন্ধু পলাতক খুনি মাজেদকে গ্রেপ্তারের পর ছবি দেখে বিস্মিত হন পার্ক ষ্ট্রিটের বেলফোর্ড লেনের বাসিন্দারা। এখানের ঘাপতি মেরে ছিলেন এই ঘাতক। তবে মাজেদ নামে নয়, আলি আহমেদ। ইংরেজীর মাষ্টার মশাই হিসেবে। এলাকার লোকজন জানতো সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পাশ করেছেন তিনি। টিউশন পড়িয়ে সংসার চালাতেন। প্রথমে ভাড়া থাকতেন তালতলায়, পরে পার্ক ষ্ট্রিটে আসেন।
কলকাতায় মাজেদ শুধু পালিয়ে ছিলেন না, বিয়েও করেছেন আরেকটা। ২০১১ সালে তার থেকে ৩২ বছরের ছোট উলুবেরিয়ার সেলিনা বেগমকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের ছয় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। কিছুদিন ধরে ৭২ বছর বয়সী মাজেদের শরীর ভালো যাচ্ছেনা সেখানকার পিজি হাসপাতালে একদফা পরীক্ষাও হয় শরীরের। ২২ ফেব্রুয়ারি সেই রিপোর্ট নিতে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। আর ফিরে আসেননি। মাজেদের উদ্বিগ্ন স্ত্রী পার্ক ষ্ট্রিট থাকায় মিসিং ডাইরি করেন। তদন্তও শুরু করে পুলিশ। হাসপতালের সিসি টিভিতে তন্নতন্ন করে খুঁজেও হদিশ মেলেনি মাজেদের।
এরপর মাজেদের ভাড়া বাড়ি থেকে একটি ব্যাগ পায়। সেই ব্যাগে সিম কার্ড, আধার কার্ড, ভারতীয় পাসপোর্ট ও একজন লোকসহ তিনটি শিশুর ছবি পাওয়া যায়। স্ত্রী সেলিনা পুলিশকে জানায় ব্যাগের মতো তার ব্যক্তিগত কোন জিনিষপত্রে হাত দিতে দিতেন না মাজেদ।
এলাকার লোকজন জানান, মহল্লার কারো সাথে খুব একটা মেলামেশা করতেন না মাজেদ। টিউশনির পাশাপাশি বড়জোর একটি চায়ের দোকান, রেশনের দোকান ও একটি বিল্ডার্সের দোকানে আড্ডা দিতেন তিনি। বাড়ির সদর দরজায় সব সময় তালা লাগানো থাকতো। বাইরের কাউকে ঢুকতে দেয়া হতো না। এভাবেই আঠারো উনিশ বছর কলকাতায় আত্মগোপন করে ছিলেন খুনি মাজেদ। কলকাতার পুলিশকে বোকা বানিয়ে এতো বছর অবস্থান করায় বিস্মিত সকলেই। (ভারতীয় পত্রিকা অবলম্বনে)

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!