কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচন মুখোমুখি আওয়ামীলীগ-বিএনপি

বিভাস প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামীলীগ প্রার্থী কাজিউল ইসলাম ও বিএনপি প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বেবুর মধ্যে। তবে মাঠের লড়াইয়ে সক্রিয় রয়েছেন সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপির বহিস্কৃত সহ-সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, পৌর আওয়ামীলীগের বহিস্কৃত যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল হাসান দুলাল এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুল মজিদ। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা চলছে শান্তিপূর্ণভাবে।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাচন। এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন ও সাধারণ কমিশনার পদে ৩৯ জন ও সংরক্ষিত কমিশনার পড়ে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে ২৪টি কেন্দ্রে ৫৬ হাজার ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
আওয়ামীলীগ প্রার্থী মো:কাজিউল ইসলাম সাবেক পৌর চেয়ারম্যান। বাসদ থেকে তিনি আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এবং দীর্ঘদিন ধরে পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। মনোনয়ন পাবার পর অপর মনোনয়নপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সাজুর সমর্থকরা তার বিরুদ্ধে সমাবেশ-মিছিল ও মানববন্ধন করে। তবে জেলা নেতাদের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত সাজু ও তাঁর সমর্থকরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে জেলা আওয়ামলীগের সভাপতি মো: জাফর আলী ও সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন দু’টি ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে দল। কাজিউল ইসলাম জাফর আলীর সমর্থক। তবে দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে আমান উদ্দিন মঞ্জু ও তাঁর সমর্থকরাও আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ড পর্যায়ে ব্যাপক জনসংযোগ ও প্রচার কার্যক্রমে অংশ নেয়ায় নির্বাচনে জয়ের আশা করছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থী কাজিউল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচিত হলে পৌরসভার সব সমস্যার সমাধান ছাড়াও শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে তিনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তবে কাজিউল ইসলামের এলাকায় সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইদুল হাসান দুলাল তাঁর জন্য কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি করছেন।
বিএনপির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বেবু পেশায় একজন শিক্ষক ও সাংবাদিক। মনোনয়ন পাবার পর উজ্জীবিত নেতা-কর্মীরা কোন বাঁধা ছাড়াই সমান তালে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন তিনি। তাঁর পক্ষে দল, অঙ্গসংগঠনের বেশীভাগ নেতাকর্মী নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। এমনকি কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী তাঁর পক্ষে প্রচারে অংশ নিয়েছেন। তবে দলে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় অস্তস্তি কাটছেনা। সাবেক মেয়র আবু বকর সিদ্দিক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে।
বিএনপির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বেবু জানিয়েছেন, বহিস্কৃত আবু বকর সিদ্দিকের পক্ষে দলের কোন নেতা-কর্মী বা সাধারণ ভোটারকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই। তিনি আরো জানান, দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচনী প্রচারে কোন বাঁধা আসেনি। তবে ইভিএম নিয়ে তার ও ভোটারদের শঙ্কা কাটেনি। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুল মজিদও দিন রাত ভোটের মাঠে সক্রিয় থেকে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, নির্বাচনে আইন-শৃংখলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ এখনও শান্তিপূর্ণ আছে, আশা করা যায় নির্বাচনও শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হবে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!