হাতিয়ায় ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙন: গৃহহীন ৩ শতাধিক পরিবার

রোকনুজ্জামান মানু, উলিপুর:
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে ২ মাসের ব্যবধানে প্রায় ৩ শতাধিক বসত-বাড়িসহ কয়েক শত একর ফসলি জমি ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ফলে কাঁচা ধান কাটতে বাধ্য হয়েছেন কৃষকরা।
এদিকে, নদের তীব্র ভাঙনের ফলে প্রায় ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রহ্মপুত্রের ডানতীর রক্ষা প্রকল্প, ৩টি গ্রামের প্রায় সাড়ে ৮০০ বাড়ি-ঘর এবং সহ¯্রাধিক একর আবাদী জমি হুমকির মুখে রয়েছে।
উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, নীলকণ্ঠ ও হাতিয়া গ্রামের প্রায় ১৮০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙন কবলিত মানুষজন তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। ভাঙনের শিকার এসব হতদরিদ্র মানুষেরা নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। একদিকে নদী ভাঙন অন্য দিকে মহামারী করোনাভাইরাসে কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষজন পড়েছেন ভোগান্তিতে । দ্রুত ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
নীল কণ্ঠ গ্রামের আজিজুল হক বলেন, ‘রাতে জমিতে পানি দিয়ে স্যালো মেশিন রেখে বাড়ি গিয়েছি। সকালে এসে দেখি স্যালো মেশিন নদীতে চলে গেছে’।
নদী ভাঙনের শিকার পেপার বিক্রেতা সফিয়ল মিয়া, মাছ ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া, দিনমজুর ইদ্রিস আলী, আব্দুর রশিদসহ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ‘বর্তমানে কাজ না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছি। এর মধ্যে নদী ভাঙনের কারণে অনেকটা বিপাকে পড়তে হয়েছে।’ হাতে কাজ নেই, ঘরে খাবার নেই। এমন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের।
হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘নদী ভাঙনের ফলে এসব মানুষ সর্বশান্ত হয়ে গেছে। দ্রুত ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে প্রায় সাড়ে ৮০০ বাড়ি-ঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে চলে যাবে।’
উলিপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপদকালীন প্রকল্পের মাধ্যমে ১ কিলোমিটার জায়গায় ভাঙন রোধে ৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যত দ্রুত সম্ভব বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে’।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙন রোধে ১৭৫০ মিটারের জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্প একনেকে পাশ হলে ব্লক-পিচিং করা হবে।’

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!