কুড়িগ্রামে ঝড় বৃষ্টিতে ভুট্রা ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি

বিভাস প্রতিবেদক:
ঘুর্ণিঝড় আম্ফান এর প্রভাবে কুড়িগ্রামে উঠতি বোরো, ভুট্রা ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়িও বিধবস্ত হয়েছে। বাড়ছে নদ-নদীর পানি। অনেক এলাকায় এখনও বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জেলার রাজারহাট, উলিপুর, নাগেশ^রীসহ বিভিন্ন স্থানে পাকা বোরো ধান মাটিতে পড়ে গেছে। সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী, হলোখানা ও মোঘলবাসা এবং রাজারহাট উপজেলার ছিনাই এলাকায় মরিচ, পটল, বেগুন,লাউসহ সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এসব এলাকা ছাড়াও চরাঞ্চলের অনেক ভুট্রার ক্ষেত মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে।
সদর উপজেলার শিবরাম গ্রামের কৃষক আরিফুল ইসলামের এক একর জমির ভুট্রা ও ৩৫ শতক জমির মরিচ নষ্ট হয়েছে। একই এলাকার আমজাদ হোসেনের ৭০ শতক ভুট্রা, আহাম্মদ আলীর ৫০ শতক ঢেড়স ও চাঁদ মিয়ার ৩৫ শতক মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রাথমিক হিসেব মতে জেলায় ৫৩ হেক্টর জমির বোরো সম্পূর্ণ ও ৪৮১ হেক্টর আংশিক ক্ষতি হয়েছে। শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে ১২০ হেক্টর জমির।
ঝড়ের কারণে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বাড়িঘর বিধবস্ত হয়েছে। সদর উপজেলার কুয়েত পল্লী এলাকার আব্দুল জলিল, রাজারহাটের রামরতন গ্রামের নুরুন্নবী, জহুর আলী ও উলিপুরের পান্ডুল ইউনিয়নের কাগজীপাড়া গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, ঘরের উপর গাছ উপড়ে পড়ে তাদের ঘর বিধস্ত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, টানা বৃষ্টিতে প্রায় সব গুলো নদ নদীর পানি বেড়েছে। আরও দুই একদিন পানি বাড়তে থাকবে। বিশেষ করে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে নিচু এলাকা প্লাবিত হবার আশঙ্কা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র রায় জানান বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টার পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে মোট ১৩৩ মিলিমিটার।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ ডা. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানায় জেলায় মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে কৃষকরা ৬০ ভাগ ধান কেটে নিয়েছে। বাতাসে কোন কোন স্থানে নিচু জমির ধান মাটিতে পরে যেতে পারে তবে খুব একটা ক্ষতি হবে না।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও কিছু ফসলের ক্ষতি ও বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!