কুড়িগ্রামে মাঝারী শৈতপ্রবাহে জনজীবনে ভোগান্তি

বিভাস প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামে গত দু’দিন ধরে চলছে মাঝারী শৈত্যপ্রবাহ। এরফলে জনজীবনে দেখা দিয়েছে ভোগান্তি। শনিবারও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ডিগ্রি সেলসিয়াসে। জেলা জুড়ে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নীচে অবস্থান করায় কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। এদিকে তীব্র শীতের কারণে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
এদিকে, ঘন কূয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে জেলার স্বাভাবিক জনজীবন। ব্যাহত হচ্ছে দৈনন্দিন কাজকর্ম। অতিরিক্ত ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না অনেকেই। সড়কগুলোতে কমে গেছে যানবাহনসহ কর্মজীবী মানুষের আনাগোনা। সকাল থেকে কুয়াশার সাথে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে যানবাহনে হেড লাইট জ্বালিয়েও চলতে দেখা যায়। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও পরেছে শীতকষ্টে। অতিরিক্ত ঠান্ডার প্রকোপে দেখা দিয়েছে সর্দি কাশিসহ নানা ঠান্ডাজনিত রোগব্যাধী। সদ্য বেড়ে ওঠা আলু ক্ষেতে ছত্রাকের আক্রমন দেখা দিয়েছে। ছত্রাকের আক্রমন থেকে আলু ক্ষেত রক্ষা করতে ঘন ঘন ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে কৃষকদের। এদিকে লাল হয়ে গেছে কৃষকের আরাধ্য বোরো বীজতলা।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আনিছুর রহমান জানান, শনিবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই অবস্থা আরো ২—১দিন অবস্থান করতে পারে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: পুলক কুমার সরকার জানান, শনিবার হাসপাতালে ২৯৬জন রোগী ভর্তি আছে। এরমধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ৪৮জন এবং ডায়রিয়া আইসোলেশনে ৩৯জন। শীতজনিত কারণে শিশুরা যাতে সমস্যায় না পরে এজন্য গড়ম কাপড়ে ঢেকে রাখতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও তাদের পরিস্কার—পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সুষম খাবার দিতে হবে। ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইন অব্যাহত রাখতে হবে। রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. আব্দুর রশীদ জানান, তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নীচে অবস্থান করলে কৃষিতে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হবে। আলুতে লেট ব্লাইডের আক্রমণ হতে পারে। এছাড়াও বোরা বীজতলা লালচে হয়ে ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হতে পারে। কৃষকরা ইতিমধ্যে ১০ হাজার হেক্টর জমির উপরে প্লান্টেশন শুরু করেছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আলু ক্ষেত্রে ছত্রাক নাশক স্প্রে করার কম্পোজিশন কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে জানিয়ে দিচ্ছি। এছাড়াও আমাদের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে তদারকি করছে। চলতি বছর জেলায় ৬ হাজার ৮৮৫ হেক্টর বোরো বীজতলা ও ৭ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, শীতে মানুষ যাতে কষ্ট না পায় এজন্য সরকারিভাবে প্রাপ্ত প্রায় ৭০ হাজার কম্বল উপজেলাগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও ৬ হাজার সোয়েটার বিতরণ করা হয়েছে। শীত বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদা দেয়া হয়েছে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!