আব্দুল খালেক ফারুক:
ধরলা নদীর বালুচরে ফুলচাষ করে সাফল্য পেয়েছেন চরের চাষী নজরুল ইসলাম। বাহারি রঙ আর গন্ধে ভুরে গেছে ফুলের বাগান। ৬৫ শতক জমিতে গাঁদা, গ্লাডিউলাস ও গোলাপের চাষ করে চলতি বছর ৩ লাখ টাকার ফুল বিক্রি করেছেন তিনি। আরো দুই লাখ টাকার ফুল অনায়াসে বিক্রি করার আশা করছেন এই চাষী।
নজরুল ইসলাম জানান, গত মৌসুমে হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোব চরে ৩০ শতক জমিতে পরীক্ষামুলকভাবে ফুল চাষ করেছিলেন তিনি। ৪০ হাজার টাকার ফুলও বিক্রি করেছেন। ফুল চাষের সম্ভাবনা দেখে ভুট্রার আবাদ বাদ দিয়ে এ মৌসুমে ৩০ শতক জমিতে গাঁদা, ১৫ শতকে গ্লাডিউলাস ও ২০ শতকে গোলাপের চাষ করেছেন। যশোর থেকে চারা এনে ফুল লাগানোর এক মাসের মাথায় গত বছরের অক্টোবর থেকে ফুল বিক্রি শুরু করেছেন। কুড়িগ্রাম শহরের মিম পুষ্পালয় তার সব ফুল কিনে নিচ্ছে। ফলে লাভবান হচ্ছে উভয়ই।
তিনি আরো জানান, চরের পলিযুক্ত বালু মাটিতে অল্প পরিচর্যা আর খরচে ফুলের চাষ হচ্ছে। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ফুলচাষ হচ্ছে। বন্যার সময়টা এমনিতেই উৎপাদন কমে যায়। তাই তেমন কোন ক্ষতি হয়না। বর্তমানে প্রতিটি গোলাপ ১০ টাকা, গ্লাডিউলাস ১০ টাকা ও গাঁদা ফুল প্রতি একশ ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।
কুড়িগ্রাম কলেজরোডস্থ মিম পুষ্পালয়ের মালিক মানিক মিয়া জানান, দু’বছর আগে কুড়িগ্রামে শতভাগ ফুলের চাহিদা মেটাতে হতো যশোর থেকে ফুল এনে। কিন্তু গত বছরে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের উদ্যোগে কুড়িগ্রামের রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নে ফুলচাষ শুরু হয়। এ বছরও ওই এলাকায় এক একর জমিতে ফুল চাষ করা হচ্ছে। পাশপাশি ধরলার চরে ফুলচাষের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এখন কুড়িগ্রামে উৎপাদিত ফুল দিয়ে অনেকটা চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানান, কুড়িগ্রামে ফুল চাষের বিপুল সম্ভাবনা দেখে তিনি ফুল চাষ করার জন্য কৃষকের উদ্বুদ্ধ করছেন। এতে ফুলচাষীরা লাভবান হচ্ছে। অনেকেই এখন ফুলচাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
ধরলার চরে ফুলের হাসি
Facebook Comments
Share