৭০ ভাগ লোককে খাদ্য দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে

পার্থ সেনগুপ্ত, কলকাতা থেকেঃ

করোনা ভাইরাসের কড়াল থাবাতে আজ সারা বিশ্ব আক্রান্ত। কলকাতা শহর ও তার বাসিন্দারা এর থেকে ব্যতিক্রম নয়। যা চীন দেশের উহান শহরে প্রথম অবধি ছিল, তা আজ কলকাতাবাসীদের গ্রাস করে নিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এজন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করোনা মোকাবিলার ব্যবস্থা করছেন। বেলেঘাটা আই.ই.ডি. ছিল করোনা মোকাবিলার জন্য একমাত্র প্রতিষ্ঠান, কিন্তু বর্তমানে পাঁচটা হাসপাতাল শুধুমাত্র করোনা মোকাবিলার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। 

অতি প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো ও সরবরাহের জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত করেছে সরকার। বিশেষ করে বয়স্কদের খাদ্যসামগ্রী ঘরে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।  রান্নার গ্যাস সরবরাহের জন্য ২৪ ঘণ্টা ডেলিভারি চালু রাখা হচ্ছে। সমস্ত কলকাতার মানুষকে ঘরে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, কারো খাদ্য বা হাসপাতালে যাবার অসুবিধা থাকলে পুলিশ তার দায়িত্ব নিচ্ছে। এতে করে অনেক করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তিকে পুলিশের মাধ্যমে হাসপাতাল পৌঁছে দেয়া যাচ্ছে । এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারও আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। আক্রান্তদের চিকিৎসার যাতে অবহেলা না হয়, সেদিকেও সরকার বিশেষভাবে নজর রাখছে।

সরকার আরেকটা গুরুত্বপুর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে- ফুড রেশনিং ব্যবস্থা সচল রাখা। রাজ্যের ৭০% লোককে বিনামূল্যে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অত্যন্ত কম দামে যেমনঃ প্রতি কেজি ২টাকা দরে চাল, ৩টাকা দরে গম ও অন্যান্য অত্যাবশ্যক খাদ্যদ্রব্য দেয়া হচ্ছে।  

দোকান আর বাজার দিনের বেলা ৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হচ্ছে। নজর রাখা হচ্ছে, যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়। তা সত্বেও শহরের কয়েকটা জায়গায় লোকজন এই নির্দেশ উপেক্ষা করে চলেছে। এমনিতে মন্দির, মসজিদ, চার্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে মানুষ জমায়েত না হয়। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে লোকজন নির্দেশ উপেক্ষা করছে। সে ব্যাপারে পুলিশ কঠোর হাতে সমস্যার মোকাবিলা করছে। লাঠি ও মারের ভয় দেখিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে। যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, হাজতবাসের সাথে অনেক মোটা অঙ্কের জরিমানাও দিতে হচ্ছে তাদের। রাস্তায় একমাত্র জরুরী সার্ভিসের গাড়ি চলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এসবের মধ্যেও শহরবাসীর ভয় ও আতঙ্ক করোনা ভাইরাস কে নিয়ে। অনলাইন এ অনেককে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। 

যদিও অনেকেই  এই লকডাউন উপভোগ করছেন, তারপরও বাচ্চাদের খুবই সমস্যা হয়েছে। তাদের বাড়ি থেকে না বের হওয়ার জন্য বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিজ-এর মধ্যে রাখা হচ্ছে।

তবে এভাবেই যে ভাইরাস মোকাবিলা করা যাবে, তা শহরবাসী ভালোমতোই বুঝে গেছে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!