আমেরিকাবাসীর মুক্তি

চৌধুরী সফিউদ্দিন, নিউইয়র্ক থেকেঃ

‘Are you win?’

একটি সহজ প্রশ্ন । এক সেকেন্ড এর কম সময় নিয়ে শামীমা উত্তর দেয়- ‘Yes , I win.’

প্রশ্নকারীর চেহারাটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

শামীমার পাল্টা প্রশ্ন : ‘What about you ?’

উত্তর আসে- ‘Yes, I also win .’

প্রশ্নকারী বলতে থাকে, ‘You know, we have been in the prison for the last four years. By this time we have lost a lot !’

আমার স্ত্রী শামীমার কাছে আমাদের ল্যান্ডস্ক্যাপার মিস্টার গ্যাব্রিয়েলের প্রশ্ন এটি।

কোন কান্ড সে করেনি বিগত চার বছরে? প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পরেই সৌদি আরবে গিয়ে ধমকি ধামকি দিয়ে দুষ্কর্মের খরচের টাকা এনে শুরু করে দিল তার অভিযান ! প্রথম চোটেই সাতটি মুসলিম দেশ থেকে লোক আসা বন্ধ করে দিল । আর এক মুসলিম দেশ থেকে অর্থ এনে তার গলার জোর দেখলে অবাক হতে হয় যে!

চিন্তা করতে পার, পাশের দেশ মেক্সিকানদের প্রতি তার নির্লজ্জ জুলুমের বিষয়টি? যারা ওদের দেশ থেকে বৈধ-অবৈধভাবে এসে অতি কম মূল্যে পরিশ্রম বিক্রি করে এ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করে রেখেছিল যুগের পর যুগ ধরে, তাদেরকে দিল খেদিয়ে । খেদাতে গিয়ে ওদের সন্তানদেরকে (ছয় মাসের শিশুসহ) ছিনিয়ে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে বর্ডার পার করে দিল দরজা বন্ধ করে ! শুধু তাই নয়, দরজার ফাঁক ফোকর দিয়ে যেন প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য দিল সুউচ্চ দেয়াল তুলে। একদিকে ওই ছয় মাসের অসহায় শিশুর কান্না, অপর দিকে খেদিয়ে দেয়া পিতা-মাতার আর্তনাদ। দেখার কেউ নেই।

দুর্দান্ত মহাশাসকের বিরূদ্ধে টু শব্দটি করবে কে? বিশ্ব মানবতা? সেটা তো গরিব দেশের মানুষের প্রতি ছড়ি ঘুরানোর জন্য। পান থেকে চুন খসলেই হয়েছে ! বিশ্ব বিবেক? সেটা তো অর্থের কাছে বিক্রি!

বর্ডারের ওপারে সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কার কাছে ফরিয়াদ করবে সেই অসহায় পিতামাতা? সৃষ্টিকর্তা মজলুমের আর্জি মঞ্জুর করতে বিলম্ব করেননি, তিনি দেখিয়ে দিলেন বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড নিয়ন্ত্রণের ভার আর কারো কাছে নেই, শুধু তার কাছে।

আমরা যারা ভিতরে (আমেরিকার মধ্যে) আছি, তাদের অবস্থা ছিল ওই ল্যান্ডস্ক্যাপার গ্যাব্রিয়েলের মত বন্দি। হ্যাঁ, আমরা সবাই ছিলাম বন্দিশালায়। এই সময়ের মধ্যে, অর্থাৎ বিগত চার বছরে আমরা যারা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আমেরিকার বাইরে গেছি, হাড়ে হাড়ে বুঝতে পেরেছি সারা দুনিয়ার কাছে আমাদের অবস্থান কোথায়, শুধু অপেক্ষা করেছি আজকের পরিবর্তনের জন্য।

নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আর যাই হোক লম্পট নন , দুশ্চরিত্র নন , জুয়াড়ি নন , মিথ্যুক নন , সন্ত্রাসী কিংবা অহংকারী নন। ভঙ্গুর সমাজ ব্যবস্থা , দুনিয়ার অন্যান্য দেশের সাথে ভঙ্গুর সম্পর্ক কতখানি মেরামত করতে তিনি পারবেন তা জানিনা, তবে সকলের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে- এটুকু বলা যায়।

পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যেখানে অর্থের কাছে বিক্রি, সেখানে তার মত লোককে সরানো চাট্টিখানি কথা নয় । শোনা গিয়েছিল, নির্বাচনে ট্রাম্প প্রচুর টাকা খরচ করেছেন। বিপক্ষ পার্টির নেতাগণ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। কারণ, এদের তেমন টাকা নেই। লৌহ মানবী ন্যান্সি পেলোসির সঠিক নেতৃত্বে আজ আলোর দিশা পেয়েছে আমেরিকাবাসী।

বিগত চারটি বছরে CNN -এর সাংবাদিকগণের নেতৃত্বে আলোচনাকারীদের আলোচনা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে আমার ছোট ছেলে ড্যানির কাছে বলতাম , ‘তোমাদের এই বকর বকর আর কতদিন শুনতে হবে? আমরাতো অধৈর্য হয়ে পড়েছি।’ আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলত, ‘আমরা work করছি। চারটা বছর তোমাদের অপেক্ষা করতে হবে। টার্ম পুরো করতে দাও, নইলে এটি একটি খারাপ উদাহরণ হয়ে যাবে। এছাড়া তার পক্ষের কিছু লোকও তো আছে।’

আমরা অপেক্ষা করছি। অপেক্ষার ক্ষণ নাকি দীর্ঘ হয়। আমাদের অবস্থা তদ্রূপ। তারপর একে একে দৃশ্যমান হতে লাগল ট্রাম্পের অপশাসনের ক্ষেত্রসমূহ। তেল-আবিব থেকে রাজধানী জেরুজালেমে স্থানান্তরিত হওয়ায় সরাসরি সমর্থন, ফিলিস্তিনি মুসলিমদের প্রতি নির্মম নির্যাতন চালানো কিংবা খাশোগীর মত জাঁদরেল সাংবাদিককে নিষ্ঠুর হত্যায় সমর্থন করেছেন। সময় যখন ঘনিয়ে আসছে, এই সময় অল্প কদিনের ব্যবধানে দু-দুজন কৃষ্ণাঙ্গকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় প্রচ্ছন্ন সমর্থন দিয়েছেন।  তাঁর মতের বাইরে গেলেই নিজের অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তাদের অপমানজনকভাবে বরখাস্ত, কিছু কিছু সিনিয়র কর্মকর্তাকে গুম করা তার ক্ষমতার তখত্ নড়বড় করে দেয়।

বলতে পার, মহান সৃষ্টিকর্তা শেষ পেরেকটি ঠুকে দিলেন করোনা ভাইরাস দিয়ে। প্রায় দুই লক্ষ আটত্রিশ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে, আক্রান্ত হয় প্রায় এক কোটি লোক । তা সত্বেও তার কাছে ওই সকল মানুষ যেন মানুষই না! মহামারী প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান ফাউচি এ বিষয়ে সতর্ক করলে তার চাকুরি খেয়ে নেবার হুমকি দেন কয়েকবার। সাংবিধানিক চাকুরি না হলে হয়তো তাই করতেন  এখনো তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে রাখছেন। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানকে হুমকি-ধামকি দিতেও দ্বিধাবোধ করেননি। সংস্থা চালানোর খরচটাও দিলেন বন্ধ করে।

নির্বাচন যখন প্রায় আসন্ন, তখন ট্রাম্প শুরু করলেন ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ -এর কাজ। প্রথম প্রথম তিনি নির্বাচনের তারিখ পেছাতে চাইলেন। ধন্যবাদ দিতে হয় এখানকার নির্বাচন কমিশনকে। নির্ধারিত দিনেই যে নির্বাচন হবে, তা সাফ জানিয়ে দিলেন। যখন কাজ হলো না, পথ খুঁজতে লাগলেন কীভাবে পার পাওয়া যায়।

তাঁর বুদ্ধিদাতারা গবেষণায় বসে গেল। অবশেষে বুদ্ধি পাওয়া গেল- টাকা ছড়াতে হবে, নির্বাচনী সেন্টার কমাতে হবে, যাতে করে অধিক সংখ্যক মানুষ ভোট দিতে না পারে। দিনের শেষে অবশিষ্ট ভোটগুলি নির্বাচন কমিশনকে হাত করে তৃতীয় বিশ্বের দেশের মত তারা নিজেরাই যেন দিয়ে দিতে পারে। প্রত্যেকটি সেন্টারে বেশ কিছু অস্ত্রধারী লোক মজুদ করতে হবে যাতে করে ভোটারগণ ভীত হয়ে ওদের পক্ষে ভোট দেয় এবং নির্বাচন কমিশনের লোকেরা ভীত হয়ে ওদের কর্মকাণ্ডে যেন বিঘ্ন না ঘটায়। আর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জঘন্য যে কাজটি করেছে, সেটি হলো সাদা-কালোর বিভেদ সৃষ্টি। যদিও তা পূর্বে ছিল, তারপরও অত প্রকাশ্যে ছিল না। এবার তারা সামনে নিয়ে এলো।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে কালো বলতে আফ্রিকান, হিস্পানিক, এশিয়া মহাদেশের সবাই, আর সাদা বলতে সাদা আমেরিকান, ইউরোপিয়ান, অস্ট্রেলিয়ান।

সাদাদের বুঝানো হলো, এদেশ আমাদের। দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আগত লোকরা এসে আমাদের জীবন বিপন্ন করছে। আমরা আমাদের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছি। তোমরা নিজেদেরকে বাঁচাতে হলে আমাদের ভোট দাও। আমরা ওদের ক্রমাগত আসার পথ (Immigrations) বন্ধ করে দিব। আর যারা ভিতরে আছে, আস্তে আস্তে ওদেরকে বিতাড়িত করে একটি নিরাপদ দেশ বিনির্মাণ করব।

এখানে উল্লেখ না করলেই নয় যে এখানকার অধিকাংশ মানুষ রাজনৈতিকভাবে অসচেতন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিগণ যেভাবে বোঝায় সেটিই বোঝে, অন্য কোন চিন্তা করে না । প্রশাসনের সিস্টেমটাও নাগরিকগণকে এমনভাবে ব্যস্ত রাখে যে অন্য কিছু ভাবনা-চিন্তা করার মত কোন অবসর তাদের নেই। ওরা এটার সুযোগ নিয়ে থাকে। গ্রামের লোকেরা তো রাজনীতির ব্যাপারে ভীষণ মূর্খ। মোটেই মাথা ঘামায় না। এ দেশ নির্মাণে যে বহিরাগতদের অবদান আছে, সেটি অনেকে ভুলতে বসেছে। সেই ইতিহাসও অনেকে ঠিকমতো জানে না ।

সাদাদের বিশেষত গ্রামাঞ্চলের ভোটগুলি ওরা হিসেব কষে নিল। আর যেগুলো এলাকা ডেমোক্রেট, সেসব এলাকায় সে নিজেই একাকী দৌড়-ঝাঁপ শুরু করে দিল। জনগণকে বোঝাতে লাগলেন যে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন নির্বাচনে জয়ী হলে তাদের ক্ষতির সম্ভাবনা বেশী। কোভিড-১৯ এর ব্যাপারে বলতে লাগল করোনা কিছু না, এটি চায়নার তৈরী কৃত্রিম ভাইরাস। নাম দিল ‘চায়না ভাইরাস।’ চায়নার বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে লাগলেন। সাদারা তাঁর কথায় বিশ্বাস করে মাস্ক পরা ছেড়ে দিল। স্থানীয় সরকারের শাসনেই প্রত্যেকটি স্টেট চালিত হয়- এ কথা তারা ভুলে গেছিল সাময়িকভাবে। মানুষ অসুস্থ হতে লাগল। কিন্তু তার কথায় বিশ্বাসের মাত্রা ওদের কাছে বেশি মনে হওয়ায় অসুস্থ থাকাটাকে গুরুত্ব দিত না।

ট্রাকে ট্রাকে মানুষের লাশ হাসপাতাল থেকে বের হতে লাগল । সাধারণ গোরস্থানে স্থান সংকুলানের অভাবে নির্জন দ্বীপে গণকবর দিতে হলো । এই সময়টাতে ডেমোক্র্যাট পার্টির লোকেরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।

যাই হোক, এই মহামারী তাঁর জীবনে বড় রকম নাড়া দেয়। প্রথম থেকেই তাঁর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য বিজ্ঞ রিপাবলিকান রাজনীতিবিদরা তার কর্মকান্ডে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করেন। ফলে তিনি ক্রমশ একা হয়ে পড়েন।

ডেমোক্র্যাটগণ জনগণের জীবননাশের আশঙ্কায় শিহরিত হন। তারা সাধ্যমত জনগণের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।

একদিকে কোভিড-১৯-এর বিপরীতধর্মী অ্যাকশন, অপরদিকে নির্বাচনী প্রস্তুতি। যোগাযোগ, সম্প্রচার সবকিছু টেলিভিশন এবং ইন্টারনেট-নির্ভর। আবার সকলকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হলো। যাদের ইতোমধ্যে বয়স ১৮ তে পৌঁছেছে কিন্তু ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় নি, তাদেরকে সরকারের তরফ থেকে বার বার রেজিস্ট্রেশন করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। অবশ্য একবার হয়ে গেলে আর লাগে না ।

ঐ দিকে ট্রাম্প নির্বাচনী ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ব্যস্ত। এদিকে ডেমোক্র্যাটগণ পিছিয়ে থাকেননি। গত চার বছর শুধু গবেষণা করেছেন কীরকম স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অবলম্বন করলে ওদের ইঞ্জিনিয়ারিং কৌশল বন্ধ করে তাদের ঝুড়িতে ভোট বাড়ানো যায় এবং তাকে পরাজিত করা যায় । ডেমোক্র্যাটগণ মহামারীর সময়টাকে কাজে লাগালেন। বলা হলো,  মহামারীর সময় একদিনে ভোট নেয়ার ব্যবস্থা অবলম্বন করলে রোগ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে, যেহেতু এটি ছোঁয়াচে রোগ। এই মুহুর্ত থেকে পোস্টাল ভোট এবং অগ্রিম ভোট চালু করা হোক, যা নির্ধারিত ভোটের দিনেই গণনা করা হবে।

প্রস্তাবের স্বপক্ষে বড় রকম যুক্তি থাকায় নির্বাচন কমিশন প্রস্তাব গ্রহন করে। উভয় পার্টির পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচারণা শুরু হয়। তিন মাস আগে থেকে পোস্টাল ভোট এবং প্রায় একমাস আগে থেকে অগ্রিম ভোট দেয়া চালু হয়ে যায়। স্থান বিশেষে ক্রমান্বয়ে ত্রিশ দিন, পঁচিশ দিন, বিশ দিন, পনের দিন এবং দশ দিন আগে অগ্রিম ভোট দেয়া শুরু হয়ে যায়।

আমাদের এখানে শুরু হয় চব্বিশ তারিখ থেকে। আমরা দুজন সেদিনই ভোট দিয়েছিলাম। লাইন লম্বা থাকলেও বুথ বেশি থাকায় প্রায় দুশ জনের পিছনে থাকলেও পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে ভোট দেয়া শেষ হয়ে যায়। ভোট দেয়ার নিয়ম হলো, আই ডি কার্ড অথবা পাসপোর্ট নিয়ে হল রুমে ঢুকতে হবে এক এক করে। পুলিং অফিসার আই ডি দেখে নাম কম্পিউটারে দিতেই সব কিছুর বিস্তারিত বিবরণ চলে আসবে।  রেজিস্ট্রেশন করার সময় স্বাক্ষরের সাথে আই ডি বা পাসপোর্টের স্বাক্ষরের মিল আছে কিনা তা দেখে নেবে। এরপর হাতে ব্যালট পেপার আর একটা কলম ধরিয়ে দিয়ে বুথে যেতে বলবে। এই সময় পুলিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসার স্বাক্ষর করবেন।

অনেক বুথ, সবাই ব্যস্ত। খালি পেলেই সেখানে গিয়ে প্রার্থীর নামের পাশে গোল চিহ্নটা পুরো কালো করে দাগিয়ে দিতে হবে। এমনি করে যাকে যাকে ইচ্ছা ভোট দিয়ে ফিরে আসতে হবে সেই পুলিং অফিসারের কাছে। সেখানে একটি অটোমেটেড ভোট কাউন্টিং বক্স থাকে। ঐ বক্সে ব্যালট পেপার ঢুকিয়ে দিলে ‘Vote counted’ লেখা ভেসে উঠবে, তখন ভোট দেয়ার কাজ শেষ হবে।

আমেরিকার ইতিহাসে নাকি কখনো এত ভোটার ভোট দেয়নি। এখানে দুটি মোটিভ কাজ করেছে। একটি হলো জালিম সরকারপ্রধান থেকে মুক্তি, অপরটি হলো কর্তৃত্ব বেহাত হবার আশংকা থেকে লড়াই।

এখন ফলাফলের পালা। উভয় পক্ষই আশাবাদী। কিন্তু ট্রাম্প সরকার চিন্তিত। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছেন, যদি সমস্ত ভোট গণনায় আসে, তবে তাঁর নির্ঘাত পরাজয়। অতএব, অন্তত পোস্টাল ভোট ঠেকাতে হবে।

বাইডেন বসে ছিলেন না। তিনি জোর দিয়ে বললেন, ‘যত সময় লাগে লাগুক সমস্ত ভোট গণনা করতে হবে।’ এইখানে ট্রাম্প চেষ্টা করলেন বাধা দিতে। কিন্তু বাইডেন নাছোড়বান্দা এবং তার যুক্তির জোর বেশি। অবশেষে সময় বেশি লাগলেও  ৭ নভেম্বর, ২০২০ এ রিপাবলিকানদের স্থায়ী দুর্গ ভেদ করে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন তাঁর রানিং মেট কমলা হ্যারিসসহ হাসিমুখে জয় ছিনিয়ে নেন।

এরপর বহু জাঁকজমকের সাথে সেলিব্রেশন সমাপ্ত হলো। এভাবে ট্রাম্পের ছল-চাতুরীর অবসান ঘটল, আমেরিকাবাসী নতুন দিনের স্বপ্নে বিভোর হলো।

সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, বাইডেনের আগামী দিনগুলো যেন আমেরিকাবাসীর জন্য মঙ্গলময় হয়।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!