কুড়িগ্রামে সবজি চাষ করে লোকসানে কৃষক

বিভাস প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামে কমে গেছে সবজির বাজার। কাঙ্খিত মূল্য না পেয়ে হতাশা বাড়ছে সবজি চাষীদের। এখন প্রতি কেজি কপি ৩ টাকা আর আলু প্রতি কেজি ৯ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তাও মিলছেনা ক্রেতা। পাশাপাশি বেগুন, সিমসহ আরো কয়েকটি সবজির দাম কম ১০-১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে এই মৌসুমে সবজি চাষ করে লোকসানে পড়েছে কুড়িগ্রামের বহু কৃষক।
সরেজমিন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ও কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের সবজি চাষীদের কথা বলে জানা গেছে, ক্রেতা সংকটের কারণে বেশীরভাগ সবজির দাম কমে গেছে। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে ব্যর্থ কৃষকরা গুণছেন লোকসান। মুলা, কপিসহ কোন কোন সবজি ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার শিবরাম ফকিরপাড়া গ্রামের কৃষক মাহফুজার রহমান জানান, তিনি ৪৮ শতক জমিকে ফুল কপির চাষ করেছেন। খরচ পড়েছে ৩৯ হাজার টাকা। ভালো ফলন পেয়ে লাভের আশা করলেও ক্রেতা আর দাম না থাকায় পড়েছেন বিপাকে। বর্তমানে কুড়িগ্রাম বাজারের মোকামে প্রতি কেজি কপি ৩টা আর প্রতি পিচ ৪ থেকে সাড়ে ৪টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এ পর্যন্ত মাত্র ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করছেন। কপি তুলে পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে এনে লাভ হচ্ছেনা। তাই ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে কপি।
হলোখানার মহাজাল ফাড়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া জানান, তিনি ৩০ শতক জমিতে বেগুন ও সম পরিমাণ জমিতে শিমের চাষ করেছেন। খরচ পড়েছে ৬৫ হাজার টাকা। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ১৫ হাজার টাকা শিম ও বেগুন বিক্রি করেছেন। এখন প্রতি কেজি বেগুন ও শিম মাত্র ১২টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তাও ক্রেতার সংকট রয়েছে।
এবছরের আলোচিত সবজি আলু চাষ করেও লোকসানে পড়েছে চাষীরা। প্রতি কেজি আলু ৮-৯ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শিবরাম গ্রামের কৃষক আফসার আলী জানান, তিনি কার্ডিনাল জাতের আলু স্থানীয় পাইকারদের কাছে পৌণে ৯ টাকায় বিক্রি করেছেন। এই দামে আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচই তুলতে পারেননি। কারণ এ বছর আলুবীজের চড়া দামসহ খরচ পড়েছে বেশি। আলু পরিপক্ক হবার পরেও দাম কম থাকায় অনেকেই ক্ষেত থেকে ্আলু তুলতে পারছেনা।
টমেটো, করলা, ধনেপাতাসহ শীতকালীন অনেক সবজি এখন সস্তা। অনেকে ক্ষেত থেকে সবজি তুলে আড়ত ও হাটে নিয়ে গেলেও বিক্রি করতে পারছেনা। বাইরে থেকে সবজির পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা না আসায় সবজির চাহিদা একেবারে কমে গেছে।
তবে পাইকারী বাজারে সবজির দাম না থাকলেও খুচরা বাজারে এখনও অনেক সবজির দাম বেশী বলে জানিয়েছেন একাধিক ক্রেতা। কুড়িগ্রাম জিয়া বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী মো: শাহজাহান আলী জানান, চাহিদা কম থাকায় সবজির দাম কমে গেছে। এবছর ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকার পাইকাররাও সবজি কিনতে আসছেননা।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!