কুড়িগ্রামে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৯ মেম্বারের অনাস্থা

বিভাস প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্রী রবীন্দ্রনাথ কর্মকারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ এনে ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত ৯ সদস্যগণ অনাস্থা প্রস্তাব এবং অপসারণের দাবীতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগপত্র প্রদান করেছে।
অভিযোগকারী সদস্যগণ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৫টি অভিযোগ এনে দাবী করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ৬মাস যাবৎ ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ ও বিশেষ সভা আহবান করেননি। তিনি ট্যাক্স, রেট, জন্ম নিবন্ধন ও বিভিন্ন প্রাপ্তির প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কর্তনের অভিযোগে মামলা রয়েছে। ইদুল আজহা উপলক্ষে অসহায় দু:স্থ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নামে বরাদ্দকৃত ভিজিএফ চালের তালিকায় মৃত: ব্যক্তি, ডাবল ব্যক্তিসহ জাল টিপ দিয়ে চাল আত্মসাৎ এবং সনাতন ধর্মাবলম্বিদের নামও তালিকায় অন্তভূক্তর্ করেছেন।
এছাড়াও এলজিএসপি, কাবিটা, টিআর প্রকল্পে ওয়ার্ডসভা ও ইউপি সভা ছাড়াই দুর্নীতি করে একই প্রকেল্পে বার বার প্রকল্প নির্ধারণ করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তিনি ভিজিএফ এর কার্ড নিজের কাছে রেখে ইচ্ছেমত চাল বিতরণ করেন। কিছু কার্ডধারীকে তিনি চাল দেয়া বন্ধ করায় ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল বের করে। তিনি খোয়ারা ইজারা বরাদ্দের টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে বা কার্যবিবরণি না করেই নিজেই আত্মসাৎ করেন।
এছাড়াও বাড়িতে বসে সরকারি চিঠিপত্র লেনদেন করা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘর বরাদ্দে ভূমিহীনদের কাছে ৩০ হাজার টাকা করে উৎকোচ গ্রহন এবং দু:স্থ ও বিধবা মহিলাদের কাছ থেকে এলজিইডি কর্তৃক আরএমপি প্রকল্পে ১০ হাজার টাকা করে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক হয়ে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন ও সম্মানী ভাতা উত্তোলন করছেন মর্মে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তিনি প্যানেল চেয়ারম্যান না করেই বিদেশ ভ্রমণ করেন। এছাড়াও বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, মাতৃত্বকালিন ও বিধবা ভাতা প্রদানে তার ব্যক্তিগত লোক দিয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে ঘুষ গ্রহন করেছেন। এমন বিস্তর অভিযোগ এনে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ও অপসারণ প্রস্তাব স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
স্বাক্ষরকারী নির্বাচিত ইউনিয়ন সদস্যগণ হলেন, আফজাল হোসেন, সাদেকুর রহমান সাদেক, হারুন অর রশিদ, মহুবর রহমান, শহিদুল ইসলাম, মোর্শেদা বেগম, জাহাঙ্গীর আলম মঞ্জু, হোসনে আরা এবং আবু বক্কর সিদ্দিক।
এ ব্যাপারে জানতে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকার এর মুঠোফোনে (০১৭১৬৩৫৭৯৫৫) বারবার কল করেও সেটি তিনি রিসিভ করেননি।
অনাস্থা পত্র পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুই এক দিনের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনে এ ধরণের একটি অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ সাপেক্ষ স্থানীয় সরকার আইন ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Facebook Comments
Share
  •  
  •  
  •  
  •  
error: Encrypted Content!